স্পোর্টস ডেস্ক: বিশ্বকাপ কার হাতে উঠবে, তার থেকেও কাতারে এই মুহূর্তে বেশি আলোচনা হচ্ছে পর্তুগাল শিবিরের সমস্যা নিয়ে। সুপারস্টার রোনালদো বনাম কোচ স্যান্টোসের ইগোর লড়াই এখন রীতিমতো ‘ওপেন সিক্রেট!’
এই আবহেই ব্রাজিল শিবিরের ফুরফুরে ভাবটা আরও বেশি চোখে পড়ছে। বিশেষত নেইমার নিয়ে সতীর্থদের আবেগ। বিশ্বকাপের শুরু থেকে রোনালদো নিয়ে প্রশ্নের জবাব কেমন একটা যান্ত্রিকভাবে দিয়েছেন ব্রুনো, ক্যান্সেলোরা। সেখানে নেইমার নিয়ে অকৃত্রিম ভালোবাসার আভাস পাওয়া যায় সতীর্থদের কথায়।
বুধবার যেমন ভিনিসিয়াস জুনিয়ার বলে গেলেন, “নেইমারকে সামনে রেখেই বড় হয়েছি। সে আমার আইডল। প্রথম যখন জাতীয় দলে এলাম, ওর প্রতি একটা সম্ভ্রম কাজ করত। কিন্তু এখন যেন আমরা দুই ভাই। শুধু আমার সঙ্গে না, দলের সবার সঙ্গেই ওর সম্পর্ক ভাইয়ের মতো।”
নেইমারের এমন ভূমিকার একটা বড় কারণ, এবারের স্কোয়াডে থাকা ১৬ ফুটবলারের এটাই প্রথম বিশ্বকাপ। অধিকাংশের বয়সই বিশ-পঁচিশ। আর এই ‘ইয়ং ব্রিগেড’কে পথ দেখাচ্ছেন নেইমার। আগের দিন কোরিয়া ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দেখলাম, রাফিনহার গলা জড়িয়ে মাঠে আসছেন ব্রাজিল ফুটবলের পোস্টারবয়। রাফিনহার কানে কানে যেন কিছু বলছিলেন নেইমার।
কী বলছিলেন নেইমার? সেকথাও বললেন ভিনিসিয়াস, “নেইমার সবসময় আমাদের বিশ্বকাপ নিয়ে নানা কথা বলে। আমরা দীর্ঘদিন বিশ্বকাপ নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছি। ও প্রথম থেকেই বলে আসছে, বিশ্বকাপ অন্যরকম মঞ্চ। এটা এমন একটা প্রতিযোগিতা, যার সঙ্গে কিছুর তুলনা হয় না।”
নেইমার যে একটুও বাড়িয়ে বলেননি, তা টের পেয়েছেন ভিনিসিয়াসরা, “সত্যিই বিশ্বকাপ অন্যরকম। বিশেষত ম্যাচ শুরুর আগে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময়ই তফাৎটা বুঝতে পারছি।” আসলে নেইমার এমনই। একটা সময় নেইমার আর বিতর্ক সমার্থক ছিল। কিন্তু বিশ্বকাপের আসরে কোনও ঝঞ্ঝাট নেই তাকে নিয়ে। তিতের বাধ্য ছাত্র, দলের জুনিয়ারদের ভাই।
এরমধ্যে আরও সুখবর ব্রাজিল শিবিরে। অনেকটাই সুস্থ হয়ে অনুশীলনে ফিরেছেন অ্যালেক্স সান্দ্রো। ম্যাচ ফিট হলে লেফট ব্যাকে ফিরবেন তিনি। আর দানিলো ফিরবেন নিজের জায়গা রাইট ব্যাকে। তবে পুরোটাই নির্ভর করছে বৃহস্পতিবার অনুশীলনে সান্দ্রো কেমন খেলে তার উপর। সান্দ্রো খেললে সার্বিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচের একাদশটাই নামবে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে।
নয়তো কোরিয়ার ম্যাচের লাইন আপই ধরে রাখবেন তিতে। এদিকে কিছুটা হুঁশিয়ারির সুরেই বললেন, “দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচের পর বিশ্রামের জন্য যথেষ্ট সময় পেয়েছি আমরা। ফলে ক্রোয়েশিয়া ম্যাচ নির্ধারিত সময়ে শেষ না হলেও আমাদের কোনও সমস্যা হবে না। ১২০ মিনিট দৌড়ানোর মতো একঝাঁক ফুটবলার ব্রাজিলের স্কোয়াডে আছে।”
উল্টো আগের ম্যাচে ৩০ মিনিট অতিরিক্ত খেলার জন্য ক্রোটরাই পিছিয়ে থাকবেন বলে মনে করছেন ব্রাজিল অধিনায়ক, “গতবার ফাইনালে কী হয়েছে আমরা সবাই দেখেছি। ফাইনালে ফ্রান্সের সঙ্গে ক্রোয়েশিয়া দৌড়ে পাল্লা দিতে পারেনি। কারণ ওরা বাস্তবে পুরো একটা ম্যাচ বেশি খেলেছিল নকআউট রাউন্ডে।”