বৃহস্পতিবার, ১৮ মার্চ, ২০২১, ০৮:৪৮:৩৮

স্বামী হত্যার ৮ মাস পার হতে না হতেই ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী

স্বামী হত্যার ৮ মাস পার হতে না হতেই ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী

মাদারীপুর থেকে : মাদারীপুরের রাজৈরে আলোচিত ইকবাল মোল্লা হত্যার ৮ মাস পার হতে না হতেই তার দ্বিতীয় স্ত্রী লাকী বেগম ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। পরে এলাকাবাসীর চাপের মুখে লাকী স্বীকার করতে বাধ্য হয় যে, তার স্বামী ইকবালের বড়ভাই মঞ্জুর মোল্লার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ায় এ অবস্থা হয়েছে তার। 

বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালায় মঞ্জুর। একপর্যায়ে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে লাকীকে থামানোর চেষ্টা করে মঞ্জুর। তবে শেষপর্যন্ত বিয়ে না করায় মাদারীপুর সদর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেন তিন সন্তানের জননী লাকী বেগম। বুধবার গভীর রাতে সদর উপজেলার শ্রীনদী থেকে মঞ্জুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উমারখালী গ্রামের সুন্দর আলী মোল্লার দুই ছেলে মঞ্জুর মোল্লা (৪৫) ও ইকবাল মোল্লা (৪০)। বড় ছেলে মঞ্জুর তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন এবং মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসা-যাওয়া করেন। ছোট ছেলে ইকবাল তার দ্বিতীয় স্ত্রী লাকী ও তিন সন্তান নিয়ে নিজ বাড়িতে থেকে সুদের টাকা আদান-প্রদান করতো। কিন্তু ইকবাল খুন হওয়ার পর থেকে স্ত্রী-সন্তান ঢাকায় রেখে গ্রামের বাড়িতে এসে পিতাসহ ছোটভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে থাকা শুরু করে মঞ্জুর। 

এদিকে লাকী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় জনসম্মুখে প্রকাশ পায় তাদের সম্পর্কের ঘটনা। পরে ভাসুর মঞ্জুরের কাছে সন্তানদের পিতৃপরিচয় দাবি করেন নিহত ইকবালের দ্বিতীয় স্ত্রী লাকী। লাকীর প্রস্তাবে মঞ্জুর রাজি না হওয়ায় তিনি (লাকী) মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের শ্রীনদী গ্রামে বাবার বাড়ি ফিরে যান এবং সদর থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। 

এদিকে এলাকাবাসীর দাবি, হয়তো মঞ্জুর ও লাকীর পরকীয়ার কারণেই ইকবাল খুন হয়েছেন। পুলিশি তদন্তে বিষয়টি বেরিয়ে আসবে। এ ব্যাপারে নিহত ইকবালের প্রথম স্ত্রী মুর্শিদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী জীবিত থাকতেই তাদের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। তারাও আমার স্বামী হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। এ বিষয়ে আমি মামলা করব।

ধর্ষণ মামলার বাদী লাকী বেগম বলেন, আমার সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য একটা সুষ্ঠু বিচার চাই। গ্রেফতার হওয়ার আগে আসামি মঞ্জুর মোল্লা বলেন, ভাইয়ের মৃত্যুর ৩ মাস পর থেকে আমাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে গর্ভের বাচ্চার ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।

মাদারীপুর সদর থানার ওসি কামরুল ইসলাম মিয়া জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঞ্জুরকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছরের ২২ জুন সন্ধ্যায় ইকবাল বাড়ি থেকে নিজের মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়ে রাতে আর বাড়ি ফেরেননি। পরদিন সকালে উপজেলার ইশিবপুর ইউনিয়নের শাখারপাড় মল্লিককান্দির একটি ফসলি জমি থেকে ইকবালের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ সময় ঘটনাস্থল থেকে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত ইকবালের বড়ভাই (বর্তমানে ছোট স্ত্রীর দেয়া ধর্ষণ মামলায় আটককৃত আসামি) মঞ্জুর বাদী হয়ে রাজৈর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় উপজেলার ইশিবপুর ইউনিয়নের শাখারপাড়ের দুইজনকে আটক করে কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে