বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই, ২০২০, ১১:২৮:১৮

নি'মিষেই ভে'সে গেল প্রায় ১১ কোটি টাকার মাছ

নি'মিষেই ভে'সে গেল প্রায় ১১ কোটি টাকার মাছ

নিউজ ডেস্ক : গত কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার প্রধান নদ-নদীর পানি ফের বৃ'দ্ধি পাচ্ছে। এতে তৃতীয় দ'ফা বন্যার আশ'ঙ্কা দেখা দিয়েছে নেত্রকোনায়। এরই মধ্যে সোমবার রাত থেকে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, বারহাট্টা ও খালিয়াজুরির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় প্রায় লক্ষাধিক মানুষ নতুন করে পানিব'ন্দি হয়ে পড়েছেন। খালিয়াজুরির বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ১১৫টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। ধনু ও উব্দাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার দুর্গাপুরে বুধবার (২২ জুলাই) সকালে ৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়।

জেলায় বন্যায় ফসলের ব্যা'পক ক্ষ'তি হয়েছে। আমন বীজতলা ছাড়াও বন্যায় ডুবে ন'ষ্ট হয়েছে বিভিন্ন ধরনের সবজি ক্ষেত। বন্যার পানিতে ভে'সে গেছে কৃষকের শ্রমে-ঘামে লালিত স্বপ্ন। পুকুর ডুবে ভে'সে গেছে মাছ। জেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের হিসাব মতে, জেলার বিভিন্ন উপজেলার তিন হাজারেরও বেশি খামারির প্রায় ১১ কোটি টাকার মাছ বন্যার পানিতে ভে'সে গেছে।

গত এক সপ্তাহ আগে জেলার ১০টি উপজেলার মধ্যে প্রায় সাতটি উপজেলা দ্বিতীয়বার বন্যার পানিতে প্লা'বিত হয়। তখন অন্তত ৯৫ হাজার মানুষ পানিব'ন্দি হয়ে পড়ে। বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে শতাধিক মানুষ ঠাঁই নেয়। এর মধ্যে বেশি ক্ষ'তিগ্রস্ত হয় কলমাকান্দা উপজেলার বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দা, জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত জুনের শেষ দিকে অব্যাহত বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, খালিয়াজুরি, মদন, মোহনগঞ্জ ও বারহাট্টা উপজেলার আংশিক এলাকা বন্যার পানিতে প্লা'বিত হয়। এর দুই সপ্তাহ ব্যবধানে আবার বন্যা হয়। তখন প্রায় ৯৫ হাজার মানুষ পানিব'ন্দি হয়ে পড়ে। এর মধ্যে কলমাকান্দায় প্রায় ৭০ হাজারের মতো মানুষ পানিব'ন্দি হয়। বন্যার কারণে আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি বাঁধ, উঁচু সড়কে আশ্রয় নেয়া মানুষের খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অ'ভাব দেখা দেয়। টানা পাঁচ দিন ধরে কলমাকান্দার সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকে। কলমাকান্দায় উব্দাখালী নদীর কলমাকন্দা পয়েন্টে পানি বি'পৎসীমার সর্বোচ ৪৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ওই নদীর কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমা ৬ দশমিক ৫৫ মিটার। ওই সময়ের বন্যায় এক হাজার ২০০ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা সড়ক পানিতে ত'লিয়ে যায়। দুই শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ওঠে। এছাড়া প্রায় তিনশ একর আমন বীজতলা ও বিভিন্ন ধরনের সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়। মৎস্য সম্পদেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফজলুল কবীর জানিয়েছেন, অন্তত ৩ হাজার ৩৬২ জন খামারির ৩ হাজার ৬৭৩টি পুকুরের মাছ বন্যার পানিতে ভে'সে গেছে। এতে ৯৩৯ দশমিক ৭৪ মেট্রিক টন মাছ ও ১৯২ দশমিক ১৮ মেকট্রিক টন পোনার ক্ষতি হয়েছে। মাছ, পোনা ও অবকাঠামোগত ক্ষতিসহ সব মিলিয়ে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১০ কোটি ৯১ লাখ ৬৯ হাজার টাকা।

তিনি আরও জানান, গত ১৪ জুলাই থেকে বন্যার পানি কমে তিন দিন পর গত ১৭ জুলাই থেকে প'রিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়। কিন্তু গত ১৯ জুলাই রাত থেকে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আবারও জেলার কংস, সোমেশ্বরী, উব্দাখালী, ধনুসহ প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে ফের বন্যার আশ'ঙ্কা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিব'ন্দি হয়ে পড়েছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে