রবিবার, ০৮ মে, ২০১৬, ১০:৩১:১৩

ডাক্তারের অবহেলায় গাড়ির নিচে মাথা দিতে এসে বাগানে বাচ্চা প্রসব!

ডাক্তারের অবহেলায় গাড়ির নিচে মাথা দিতে এসে বাগানে বাচ্চা প্রসব!

রাজবাড়ী : বিশ্ব মা দিবসে খোলামেলা বাগানেই কন্যাসন্তানের মা হলেন আন্না বেগম।  গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রসবকালীন ভর্তি হওয়া এই অবহেলিত মায়ের ডেলিভারি হলো ওই কমপ্লেক্সের বাগানেই।

গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের তাহের কাজী পাড়া বাবলুর স্ত্রী আন্না বেগমকে (২৬) রোববার সকাল ৯টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।  চিকিৎসকরা তাকে বাইরে থেকে ওষুধ কেনার ভাউচার ধরিয়ে দেন।

টাকার অভাবে ওষুধ কেনা সম্ভব হয়নি তার। দায়িত্বরত নার্সরা তাকে বারবার ওষুধের তাগিদ দিতে থাকেন।  নিরুপায় হয়ে আন্না বেগম হাসপাতালের বেড ছেড়ে বাইরে চলে আসেন।

হাসপাতালের মেইন গেটের পাশে বাগানে সবার সামনে দাঁড়ানো অবস্থায় কন্যাসন্তান প্রসব করেন তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই মায়ের চিকিৎসা অবহেলার কারণে প্রসব যন্ত্রণা সইতে না পেরে হাসপাতালের বেড ছেড়ে নিচে চলে আসেন ওই মা।  সবার সামনেই দাঁড়ানো অবস্থায় তিনি একটি কন্যাসন্তান প্রসব করেন।  

এসময় ওই হাসপাতালে দায়িত্বরত নার্সরা তার কাছে এলেও ফিরে চলে যান।  এসময় এলাকাবাসীর চাপে তাকে আবার হাসপাতালের বেডে নেয়া হয়।

চিকিৎসার অবহেলার কারণে এলাকাবাসী উত্তেজিত হলে ডা. শফি-উল আজম পুলিশে খবর দেন। গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই সাইফুজ্জান ঘটনা স্থলে এসে সবার সাথে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

এসময় পুলিশ ও সাংবাদিকদের সামনে ডা. শফি-উল আজম ও নার্সিং সুপার ভাইজার বলেন, ওই মহিলা প্রসব বেদনা সইতে না পেরে একাই হাসপাতালের বেড ছেড়ে নিচে চলে আসে।  আমরা তার চিকিৎসার কোনো ত্রুটি করিনি।

অসুস্থতার কারণে এ সময় অসহায় মা আন্না বেগমের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।  হাসপাতালে আন্না বেগমের সাথে আসা তার মা ও দাদি জানান, ডাক্তারদের কোনো দোষ নেই।  আমাদের কপাল খারাপ।  গরিব ঘরে মেয়েকে বিয়া দিছি, জামাই কোনো টাকা পয়সা দেয় নাই।  আমদের কাছেও টাকা নাই।  

তারা জানান, ওষুধ কিনতে পারি নাই।  মেয়ে আমার ব্যথা সইতে না পেরে হাসপাতাল ছেড়ে গাড়ির নিচে মাথা দেয়ার জন্য চলে গেছিল।  এ অবস্থায় ডেলিভারি হইচে।

মা ও নবজাতক গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছে বলে জানান তারা।
৮ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে