সোমবার, ১২ জুন, ২০১৭, ০৭:২৫:০৪

বাহুবলীর সাথে হুররামের তুমুল লড়াই!

বাহুবলীর সাথে হুররামের তুমুল লড়াই!

এম মাঈন উদ্দিন, মিরসরাই (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ঈদের কেনাকাটা বেশ জমে উঠেছে। আর বিপণি বিতানগুলোতে ক্রেতা উপস্থিতি এবং বিক্রি বাড়ায় সন্তোষ প্রকাশ করছেন বিক্রেতারা। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন শপিং কমপ্লেক্সে লাকি কুপনের আয়োজন করেছেন ব্যবসায়ীরা।

ঈদের কেনাকাটার উদ্দেশ্যে প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বিপুলসংখ্যক ক্রেতা ভিড় জমাচ্ছে। সরেজমিনে উত্তর চট্টগ্রামের বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত বারইয়ারহাটের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত সব শ্রেণীর মানুষ। ভিড় জমাচ্ছেন মার্কেটগুলোতে। পেশার মানুষ তাদের সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় ঘটিয়ে নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করতে পারছেন। সবচেয়ে বেশি ভীড় লক্ষ্য করা গেছে মসজিদ গলির লাকী শপিং মলে।

এছাড়াও পালকি ক্লথ, শাড়িকা, রূপা ক্লথ, মাওলনা ক্লথ, উপহার ক্লথ, স্মাট গার্মেন্টস, আল আমিন মার্কেটের মাতৃছায়া বুটিকস, গ্রীণ টাওয়ারের মিলনস, রাজকুমার, সুলতান, সাব্বির শাড়িজ সহ সব দোকান, আল আমিন মার্কেট, জমিদার মার্কেট, জামালপুর সুপার মার্কেট, মহিউদ্দিন বাবুল মার্কেট, মৌচাক মার্কেট, মসজিদ মার্কেট ও সেঞ্চুরী শপিং কমপ্লেক্সে ক্রেতাদের প্রচণ্ড ভীড় রয়েছে। শাড়ী থ্রিপিসের পাশাপাশি প্রসাধনী, পারফিউম, কসমেটিক সামগ্রী, জুতা সহ বিভিন্ন পন্য ক্রয় করছেন ক্রেতারা। হাসান সুজ, অহনা সুজ, আয়েশা সুজ, গ্রীন টাওয়ারে অবস্থিত লটো, বাটা, অমনি সুজ, আল আমিন মার্কেটে এপেক্স শো-রুমে ভালো বিকিকিনি লক্ষ করা গেছে।

পাঞ্জাবীর জন্য লাকি শপিং মল, সেঞ্চুরী শপিং কমপ্লেক্সের ওয়ান ফ্যাশনে ক্রেতাদের ভীড় দেখা গেছে। এছাড়া উপজেলার জোরারগঞ্জের যুবরাজ মার্কেট, আল-মদিনা শপিং সেন্টার, স্কুল মার্কেট, মিঠাছরার শাহজাহান সুপার মার্কেট, মিরসরাই সদরে টুকু মিয়া মার্কেট, কাশেম শপিং সেন্টার, আবুতোরাব, নিজামপুর কলেজ, বড়দারোগাহাট বাজারে ঈদের বাজার জমে উঠেছে। বিক্রির দিক থেকে এবারো শীর্ষে রয়েছেন বারইয়ারহাটের ঐতিহ্যবাহী লাকি শপিং মল ও মিঠাছড়া আল-আমিন।

এদিকে বিপণিবিতান ও শপিং মলগুলোতে ক্রেতাদের সমাগম বাড়ায় স্বস্তি প্রকাশ করছে বিক্রেতারা। এ ব্যাপারে বিক্রেতারা বলছেন, রোজার প্রথম ১০ দিন বিক্রি ছিল না বললেই চলে। তবে রোজার মাঝামাঝি ক্রেতা খরা ঘুচেছে মার্কেটে। মানুষ শুধু দেখতে আসছে না। পছন্দ ও দামে মিললে পণ্য কিনে নিচ্ছে। সামনে আরো বিক্রি বাড়বে বলে তাঁদের আশা। এ অবস্থায় এত দিন অনেকটা অলস সময় কাটালেও বর্তমানে কথা বলারও ফুরসত নেই বিক্রেতাদের।

এদিকে পাখি, কিরণমালা, বাজিরাও মাস্তানির পর এবারের ঈদে তরুণীদের পোশাকের বাজার মাতাচ্ছে হুররাম সুলতান ও বাহুবলী-২। জনপ্রিয় মেগা সিরিয়াল সুলতান সুলেমানের জনপ্রিয় চরিত্র হুররাম সুলতান ও বাহুবলী-২ বলিউডি সিনেমার নায়িকার পোশাক অনুসারেই এসব নামকরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ঈদের পোশাকের তালিকায় রয়েছে সারারা, সরকার থ্রিসিহ আরো সব বাহারি নাম।

তবে ক্রেতারা বলছেন, এসব নাম শুধুই ক্রেতা আকৃষ্ট করার জন্য। বিশেষ কোনো ডিজাইন অনুসারে এ নামকরণ করা হয়নি। আর বিক্রেতারা বলছেন, সিনেমা, সিরিয়াল দেখে ক্রেতাদের মধ্যে এক ধরনের পোশাকের প্রতি মানুষের দুর্বলতা তৈরি হয়। সেই প্রবণতা থেকেই পোশাক তৈরি ও বিক্রির ক্ষেত্রে নামকরণের বিষয়টি মাথায় রাখা হয়।

বিক্রেতারা আরো বলেন, এবার ঈদ ফ্যাশন হিসেবে গাউন ধরনের পোশাক মেয়েরা বেশি পছন্দ করছে। বাজারে এ ধরনের পোশাক হুররাম, বাহুবলী-২ নামেও পরিচিতি পাচ্ছে। গাউনের পাশাপাশি লেহেঙ্গা ধরনের পোশাকেও নজর দিচ্ছে মেয়েরা। এগুলোকে সারারা বলা হচ্ছে।

এদিকে ছোটদের পোশাকের দামও বেশ চড়া বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। তামান্না আকতার নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘দোকানে গিয়ে পোশাকের নাম শুনেই মাথা ঘুরে যায়। একই পোশাকের নাম একেক দোকানে একেক রকম। ছোটদের আকৃষ্ট করতে বিক্রেতারা এসব নামের আশ্রয় নেয়। কিন্তু এতে ক্ষতি আমাদেরই হয়। আর এ বছর জামার দাম অনেক বেশি। তাই পছন্দসই পোশাক কিনতে অনেক হিমশিম খেতে হচ্ছে।

লাকী ফ্যাশন মলের স্বত্ত্বাধিকারী মোঃ শামসুদ্দিন বলেন, রমজানের শুরতে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বেচাকেনা কম হলেও এখন ভালো বিক্রি হচ্ছে। আশা করছি ২০ রমজানের পর আরো বেশি বিক্রি হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা প্রায় দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে বারইয়ারহাট বাজারে সুনামের সাথে ব্যবসা করে আসছি। যদিও আগে প্রতিষ্ঠান ছোট্ট পরিসরে ছিলো। এখন বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এবং গ্রাহকদের স্থান সংকুলান ও চাহিদার কথা বিবেচনা করে ১ম, ২য়, ও ৩য় তলায় সু-বিশাল পরিসরে সম্পুন্ন শীতাতপ পরিবেশে শো-রুম সাজিয়েছি।

সেঞ্চুরী শপিং কমপ্লেক্সের ওয়ান ফ্যাশনের সত্ত্বাধিকারী মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, দিন-রাত সমান তালে বিক্রয় হচ্ছে। দিনে গ্রাম অঞ্চলের ক্রেতাদের আনা-গোনা সব চাইতে বেশি। নতুন নামে ও ডিজাইনের জিন্স প্যান্ট, শ্যার্ট পাঞ্জাবী ও টি-শ্যার্ট ও পাঞ্জাবী রাখা হয়েছে।

গ্রীণ টাওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম জানান, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রীণ টাওয়ারকে সাজানো হয়েছে নতুন সাজে জাকজমকপূর্ণ এবং রঙ বেরঙে। প্রতিটি দোকানেই নিত্য নতুন ঈদ কালেকশনে সু-সজ্জিত। মার্কেটে প্রতিদিন ক্রেতারা ভীড় করছে। শাড়ী, থ্রিপিস, পাঞ্জাবী, জুতো এবং বাচ্ছাদের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভীড় রয়েছে চোখে পড়ার মত। মার্কেটের সামনে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। ক্রেতাদের বাড়তি আকর্ষণের জন্য লাকী কুপনের আয়োজন করা হয়েছে। ঈদের তৃতীয় দিন র‌্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হবে।-নয়া দিগন্ত
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে