রবিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৭, ০৭:৫০:৫২

মানুষের মনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিল লিটন : প্রধানমন্ত্রী

মানুষের মনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিল লিটন : প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক : গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের হত্যাকাণ্ডের জন্য স্বাধীনতা বিরোধী বিএনপি-জামায়াত চক্রকে অভিযুক্ত করে হত্যাকারীদের অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে বলে পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার সংসদে সরকারি দলের সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যায় আনীত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘মাঝে মাঝে শোনা যায় সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা কোথায় কে একটু শক্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদেরকে শেষ করে দেয়া হচ্ছে, তাদেরকেই হত্যা করা হচ্ছে। এসব হত্যা পরিকল্পনাই বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন ও কর্মকাণ্ড। এ ধরনের ঘটনা মেনে নেয়া যায় না। আমরা যেমন জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছি তখন লিটনের হত্যার সাথে যারা জড়িত তাদের ঠিকই খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে।’

তিনি বলেন, মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল এবং গাইবান্ধা থেকে সুন্দরগঞ্জ পর্যন্ত মানুষের মনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিল। এটাই ছিল তার অপরাধ। এ জন্যই তাকে জীবন দিতে হয়েছে। লিটনের মৃত্যুতে আমরা একটি সম্ভাবনাময় নেতৃত্বকে হারিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে গাইবান্ধা, পলাশবাড়ী ও সুন্দরগঞ্জ থেকে মিঠাপুকুর পর্যন্ত স্বাধীনতা বিরোধী বিএনপি-জামায়াত চক্র প্রচ- সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়। সে সময় ওই এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি আক্রমণ করে ও আগুন দিয়ে ৪ জন পুলিশকে হত্যা করে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অফিসে আগুন দিয়ে সেখানে কর্মরতদের হত্যার চেষ্টা করা হয়। বামনডাঙ্গা রেলস্টেশনে আগুন দেয়, সেখানে ২ জন পুলিশ সদস্য মারা যায়। ওই সময় এমন অবস্থার সৃষ্টি করা হয়েছিল যে কোন মানুষ ঘরে থাকতে পারেনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে বিএনপি-জামায়াত জোট ৫৮২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। ওই সময় তারা ঢাকা-রংপুর হাইওয়েতে প্রকাশ্য আগ্নেয়াস্ত্র রামদা, কিরিচ ও ডাল সরকি নিয়ে রাস্তায় টহল দেয় যাতে রাস্তায় কোন যানবাহন চলতে না পারে। ওই সময় হাজার হাজার গাড়ি পোড়ানো হয়, গাছ কাটা হয়। সেখানে জামায়াত-শিবির খুব সক্রিয় ছিল। তুলসি ঘাটে বাসে আগুন দিয়ে ৯ জনকে হত্যা করে। গোবিন্দগঞ্জে তরুণ দত্ত, দেবেস প্রামাণিক নামে দু’জনকে গলাকেটে রেললাইনের পাশে ফেলে রাখা হয়। সুন্দরগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতা মামুনকে গলাকেটে হত্যা করা হয়।

তিনি বলেন, ২০১৫ সালে তারা আবার সরকার উৎখাতের নামে একই তাণ্ডব চালায়। সারা বাংলাদেশে হাজার হাজার মানুষকে তারা হত্যা করে। প্রায় ২৩১ জনকে পেট্রোল বোমা দিয়ে হত্যা করে। ট্রাক ও সিএনজি ড্রাইভার, রিকশাচালক, ঠেলাওয়ালা, ট্রাক-বাসের হেলপার রেল-লঞ্চ কোন কিছুই তাদের আক্রমণ থেকে রেহাই পায়নি। বিএনপি-জামায়াত জোটের আক্রমণে কলেজছাত্র অভি, ৬ বছরের রুপা, অন্তঃস্বত্বা নারী মনোয়ারা ও তার গর্ভের সন্তান নিহত হয়।

শিশুর গায়ে গুলি করা হয়েছিল বলে লিটনের বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সৌরভের বাবা আওয়ামী লীগের একজন একনিষ্ঠ কর্মী। ওই পরিবারের সাথে লিটনের সুসম্পর্ক ছিল। তাকে সে কেন গুলি করতে যাবে? সেদিন সন্ত্রাসীরা লিটনকে হত্যা করার জন্য অতর্কিত হামলা চালায়। সে আত্মরক্ষার জন্য ফাঁকা গুলি চালায়। সৌরভের গায়ে যে আঘাত লেগেছিল সেটা নিয়েও অনেক সন্দেহ ছিল বা হতে পারে ফাঁকা গুলিও কারো গায়ে লাগতে পারে। কিন্তু শিশু হত্যা করতে গিয়েছিল বলে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এমনভাবে লেখা হয়েছে যে সত্যিকারের ঘটনা কেউ তুলে ধরেনি।’

আলোচনায় অংশ নেন সরকারি দলের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, মীর শওকত আলী বাদশা, শামীম ওসমান, মাহবুব আরা বেগম গিনি ও জাহাঙ্গীর কবির নানক।
২২ জানুয়ারি ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে