নিউজ ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ একটি সংবাদ সম্মেলন ডেকে তিনি আগামী নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার কথা সাংবাদিকদের জানিয়ে বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্ট সরকারে গেলে সেখানেও তার কোনো পদ পাওয়ার আগ্রহ নেই।’
গত ১৩ অক্টোবর ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর আজ প্রথম সংবাদ সম্মেলন ডাকেন কামাল হোসেন। ফ্রন্ট গঠনের দিন সংবাদ সম্মেলন করে ঐক্যের ঘোষণা দিলেও সেদিন তারা কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ দেননি। তবে আজকের সংবাদ সম্মেলনে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন নেন ড. কামাল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘যারা ক্রমাগতভাবে আমার বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ, ভিত্তিহীন ব্যক্তিগত আক্রমণ করে চলছেন। আমি স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বা কোনো রাষ্ট্রীয় পদ পাওয়ার কোনো ইচ্ছা আমার নেই। একটি গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও বহুমাত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য আমি কাজ করে যাব। আর যে জোট গঠন করেছি সেটা একটা সুষ্টু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য’
জামায়াতে ইসলামী বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ থাকা অবস্থাতে বিএনপির সঙ্গে ঐক্য গড়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ড. কামাল বলেন, ‘জামায়াতের সমর্থনে বা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সমর্থনে জাতীয় যুক্তফ্রন্ট গঠন করা হয়নি। তারেক রহমানের সঙ্গে আমার দলের কোনো সম্পর্ক নেই। বিএনপির সঙ্গে আমাদের ঐক্য আছে। এই ঐক্যে তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন এখনও হয় নাই।’
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আপনাদের এই বিষয়টি পরিষ্কার করতে চাই। জামায়াতে ইসলামী বা তারেক রহমানসহ অন্য কোনো বিশেষ নেতার প্রতি সমর্থন হিসেবে এই উদ্যোগ দেখার কোনো সুযোগ নেই। কোন বিশেষ ব্যক্তি গোষ্ঠীর জন্য এই ঐক্যফ্রন্ট নয়। দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠ নির্বাচনের জন্য আমাদের এই ঐক্য। সুতরাং এই ঐক্যকে অন্যভাবে দেখার সুযোগ নেই।’
ঐক্যফ্রন্টের সাত দাবির কথা উল্লেখ করে কামাল হোসেন বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রট এই লক্ষ্যগুলোর প্রতি সংকল্পবদ্ধ। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে এই লক্ষ্যগুলো অর্জনে কাজ করে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে এ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত দলগুলোর মধ্যে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’
কামাল হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের ঐক্য বজায় রাখার লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কাজ করে যাবে। যাতে করে রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বত্র গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য একটি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়।’
দাবি আদায় না হলে আন্দোলনে যাবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ঐক্যফ্রন্ট নেতা বলেন,’জনমত গঠনের আন্দোলন আমাদের শুরু হয়েছে।কালকে আমরা সিলেট যাব। ধারাবাহিকভাবে আমাদের কাজ চলবে। তারপরও না মানলে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেব।’
সরকারি দলের অনেকে বলছে ঐক্যফ্রন্ট ষড়যন্ত্র করছে এমন প্রশ্নের উত্তরে কামাল হোসেন বলেন, ‘সরকারে এই বক্তব্যকে স্বাগত জানাই। দেশের নির্বাচন সংবিধান মতো হবে, এটাইতো চাই। আর চক্রান্ত যেটা দেখছে, এই শব্দগুলো কম ব্যবহার করাই ভালো।’
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোস্তাক আহমেদ প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।