বুধবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১৮, ০২:২৬:৩০

শামীম-আইভীকে ঢাকায় জরুরী তলব, অস্ত্রধারী নিয়াজুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার ঘোষণা কাদেরের

শামীম-আইভীকে ঢাকায় জরুরী তলব, অস্ত্রধারী নিয়াজুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার ঘোষণা কাদেরের

নিউজ ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জে সংঘর্ষের সময় পিস্তল হাতে ছবি আসা যুবলীগ সদস্য নিয়াজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের।

ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ওখানে যদি অস্ত্রের ব্যবহার হয় এবং গোলাগুলি হয় তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছি। তিনি খোঁজখবর নিচ্ছেন, তদন্ত করে এ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।’ সেই সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাংসদ শামীম ওসমান এবং মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে ঢাকায় তলব করা হয়েছে বলেও জানান কাদের।

বুধবার সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করছিলেন ওবায়দুল কাদের। ঢাকার দুই সিটিতে ৩৬টি ওয়ার্ডে দল সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীর নাম জানাতে সাংবাদিকদেরকে ডাকেন তিনি। তবে হাইকোর্ট নির্বাচন স্থগিত করায় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। পরে মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের সংঘর্ষ নিয়ে ওবায়দুল কাদেরকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।

নারায়ণগঞ্জে হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন আলোচিত সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। ডিসেম্বরের শেষ দিকে শহরের ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ করে সিটি করপোরেশন। কিন্তু শামীম ওসমান চাইছেন হকারদেরকে আবার বসাতে।

সোমবার হকারদেরকে ফিরিয়ে আনতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন শামীম ওসমান। আর মঙ্গলবার বিকালে আইভী এবং শামীম সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় ইট পাটকেলের পাশাপশি গুলির শব্দও পাওয়া যায়।

শামীমপন্থী হিসেবে পরিচিত যুবলীগ নেতা নিয়াজুল ইসলামের পিস্তল হাতে ছবিও এসেছে গণমাধ্যমে। তবে তিনি গুলি করেছেন কি না, সেটা স্পষ্ট নয়। কারণ পিস্তল বের করার পর আইভীপন্থীরা অস্ত্র কেড়ে নিয়ে তাকে বেদম পিটুনি দিয়েছে।

শামীম ওসমান স্বীকার করেছেন নিয়াজুল তার পরিচিত। একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে তিনি বলেন, ‘নিয়াজুল আমার পরিচিত। তিনি বিশাল বড় মার্কেটের মালিক। সে সুইটের ভাই যাকে বিএনপির সময় ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছিল। এটা কি তার দোষ? তার হাতে পিস্তল দেখা গেলেও পরীক্ষা করা হোক এই পিস্তল থেকে গুলি করা হয়েছে কি না।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের ঘটনার তদন্ত চলছে, যারাই জনসম্মুখে পার্টির ভাবমূর্তি ভায়োলেন্সের মাধ্যমে নষ্ট করেছে, যারাই দোষী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

ওবায়দুল কাদের জানান, মঙ্গলবার সংঘর্ষের খবর পেয়েই তিনি মেয়র আইভী ও সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সঙ্গে ফোন করে অনভিপ্রেত ঘটনা ‘স্টপ’ করতে বলেছেন।

‘আমরা দুই পক্ষকেই ডাকব এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’
শামীম ওসমানকে কী বলেছেন- এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘আমি শামীম ওসমানকে ফোন করবো কি মারামারি করতে? আমি মারামারি বন্ধ করতেই ফোন করেছি। এই প্র্যাকটিসটা বন্ধ করতে হবে। আজ সকালেও দুইজনের সাথে আমার কথা হয়েছে।’

২০১৬ সালের শেষে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বড় দল। এখানে সমস্যা তো মাঝে মাঝে হয়। তাদের (আইভী ও শামীমের) এ সমস্যা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশও নষ্ট করেনি, আমাদের বিজয়েও বাধা হয়নি, ভোট ব্যাংকেরও ক্ষতি হয়নি।’

‘তবে যে ঘটনা ঘটেছে তা অনভিপ্রেত এবং অনাকাঙ্খিত। দলের অভ্যন্তরীণ কলহ জনসম্মুখে আসা খুবই খারাপ দৃষ্টান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছি।’

নারায়ণগঞ্জে সমস্যা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল মেয়র আইভী ও সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে আজ ডেকেছেন বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যারাই এ ব্যাপারে অপরাধী হোক, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেডিকেল কলেজের এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ নিয়েও কথা বলেন কাদের। বলেন, ‘আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি। এর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’- ঢাকা টাইমস
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে