নিউজ ডেস্ক : আর কয়েক দিন পরই কোরবানি ঈদ। চলছে পশু কেনাবেচার প্রস্তুতি। ক্রেতা চান ভালো পশু আর বিক্রেতা চান ভালো দাম। এ বছর কোরবানিকে সামনে রেখে বাগেরহাটের এক গরু পালনকারী তার একটি গরুর দাম হেঁকেছেন ২০ লাখ টাকা!
গরুটি তিনি বাজারে নিয়ে যান না। ক্রেতারা গরুটি দেখতে তার বাড়িতেই আসেন। শুধু ক্রেতা নয়, প্রতিদিন বাড়িতে ভিড় জমে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের।
গরুটির মালিক বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলর শৌলখালি গ্রামের সুধান্য হালদারের ছেলে অনুজ হালদার।
অনুজ জানান, এই গরুর ২৮ থেকে ৩০ মণ মাংস হতে পারে। গরুটির বয়স দুই বছর। গরুটি মোটাতাজাকরণে কোনো কৃত্রিম ওষুধ খাওয়ানো হয়নি। শুধু কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ানো হয়েছে। ছয় মাস পরপর কৃমিনাশক খাওয়াতেন পিরোজপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তরুণ কুমার শিকদার।
এই চিকিৎসক বলেন, ‘গরুটির জন্মের পর থেকে আমিই তার চিকিৎসা করে আসছি। কৃমিনাশক ওষুধ ছাড়া আর কোনো ওষুধ খাওয়াইনি।’
অনুজ হালদার বলেন, ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে নয় ঘণ্টা গরুর পরিচর্যায় সময় দিই। ভাত থেকে শুরু করে পরিবারে যত খাবার হয় সব ধরনের খাবারই এই গরুকে খাওয়াই। প্রতিদিন ১১ ধরনের খাবার খাওয়ানো হয়।’
তিন বছর আগে অনুজ একটি গাভি পালন শুরু করেন। তখন তার নাম রাখেন লিটু। গাভিটি এ পর্যন্ত মোট দুটি বাচ্চা দিয়েছে। এর মধ্যে বিট্টু মহারাজ (ষাঁড়টি) বড়। ছোটটির নাম লক্ষ্মী। বয়স সাড়ে পাঁচ মাস।
এই কোরবানিতে বিট্টু মহারাজকে বিক্রি করবেন। গরুটির এই নামকরণের কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, জন্মের পর দুই থেকে তিন ঘণ্টায় কোনো সাড়াশব্দ বা শ্বাস নিতে দেখেননি। অনেক পরিচর্যার পরে হঠাৎ নড়ে ওঠে। আর তখন তিনি বলে ওঠেন বিট্টু মহারাজ জেগেছে। আর সেই থেকেই নাম বিট্টু মহারাজ।
অনুজ মনে করেন, মহারাজই তাকে বাঁচিয়ে রেখেছে। আর মায়ের নামের সঙ্গে মিলিয়ে নাম রাখেন বিট্টু। বিট্টু ও মহারাজ মিলিয়ে তাকে বিট্টু মহারাজ বলে ডাকেন।
তিনি জানান, ঢাকার থেকে অনেকে গরু দেখতে এসেছেন। তিনি গরুটির দাম হেঁকেছেন ২০ লাখ টাকা।
অনুজ হালদার বলেন, ‘দেশের কয়েকটি বড় বড় কোম্পানি থেকে গরুটি দেখতে এসেছেন। তাদের মালিকপক্ষকে দেখানোর জন্য ছবি তুলে নিয়ে গেছেন। আমি দাম চেয়েছি ২০ লাখ টাকা। তারা দাম শুনে গেছেন।’
তিনি আরো জানান, সরকারি কোনো সহযোগিতা তিনি চাননি বা কেউ তাকে সহায়তায় এগিয়ে আসেননি।
একই উপজেলার দৈবজ্ঞাহাটি থেকে গরু দেখতে আসা মাসুদ সরদার জানান, এত বড় গরু তিনি এর আগে আর কখনো দেখেননি। এভাবে ব্যক্তি উদ্যোগে গরু পালন করা হলে আমদানি করা গরুর ওপর নির্ভরশীলতা কমে যেতে পারে। -রাইজিংবিডি
০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম