রবিবার, ০৪ মার্চ, ২০১৮, ০১:০৪:২৩

নির্যাতন সইতে না পেরে শরীরে আগুন দিলো গৃহবধূ

নির্যাতন সইতে না পেরে শরীরে আগুন দিলো গৃহবধূ

বাগেরহাট থেকে : বাগেরহাটের শরণখোলায় শরীরে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন কমলা নূরী (২০) নামের এক গৃহবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকাল ১০টার দিকে সাউথখালী ইউনিয়নের বকুলতলা গ্রামে। আগুনে গৃহবধূর শরীরের প্রায় ৬০ ভাগ দগ্ধ হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

তাকে শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্বামী ও শাশুড়ির অমানুষিক নির্যাতন সইতে না পেরে এক সন্তানের মা কমলা নূরী শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়েছেন বলে পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

ওই গৃহবধূ ধানসাগর ইউনিয়নের পশ্চিম রাজাপুর গ্রামের মৃত মোক্তার খলিফার মেয়ে। একবছর আগে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে বকুলতলা গ্রামের মোতালেব হাওলাদারের ছেলে মো. ইলিয়াস হাওলাদারের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের ঘরে আরমান নামের তিন মাসের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। ইলিয়াসের এটি দ্বিতীয় বিয়ে।

কুমিল্লার একটি মাছের আড়তে কর্মরত কমলার ভাই আলামিন খলিফা মোবাইল ফোনে বলেন, কমলা চট্টগ্রামের একটি পোশাক কারখানায় (গার্মেন্ট) কাজ করতো। সে কলসি দিঘিরপাড় এলাকায় বাসা নিয়ে থাকতো। একই এলাকায় ইলিয়াস একটি খাবার হোটেলে বয় হিসেবে কাজ করার সুবাদে তাদের মধ্যে পরিচয় ঘটে।

একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একবছর আগে তারা নিজেরাই বিয়ে করে। এ সময় ইলিয়াস তার প্রথম স্ত্রী ও সন্তানের কথা গোপন রাখে। পরে তারা চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে চলে আসে।

আলামিন আরো বলেন, ইলিয়াসের মা, বাবা ও পরিবারের লোকেরা কমলাকে মেনে নিতে পারেনি। বিভিন্নভাবে নির্যাতন চলতে থাকে তার ওপর। স্বামী ও শাশুড়ি মিলে নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। এনিয়ে বহুবার স্থানীয় মেম্বার ও গণ্যমান্যরা সালিশ বৈঠক করেও নির্যাতন বন্ধ করতে পারেনি। এক সপ্তাহ আগেও আমি গিয়ে তাদের মিলিয়ে দিয়ে এসেছি। স্বামী ও শাশুড়ির নির্যাতন সহ্য করতে না পেরেই আমার বোন গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছে।

ইউপি সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন খলিল জানান, ইলিয়াস এবং তার মা তাসলিমা বেগম খুব খারাপ প্রকৃতির মানুষ। তারা দুজনে মিলে কমলাকে মারধরসহ নানাভাবে নির্যাতন করতো। তিন-চার মাস আগে তার শরীরে কারেন্ট শক দিয়েছে ইলিয়াস। এনিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ করা হয়েছে। কিন্তু কিছুদিন পর পর আবার নির্যাতন শুরু হয়।

শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অসিম কুমার সমাদ্দার বলেন, গৃহবধূর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার শরীরের ৬০ ভাগ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আমি এবং ওসি সাহেব টাকা পয়সা দিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি।

শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কবিরুল ইসলাম জানান, পারিবারিক নির্যাতনের ফলে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। বিষয়টির তদন্ত চলছে। এমজমিন

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে