এমটি নিউজ২৪ ডেস্ক : বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে প্রায় দেড় মাস আগে মারা গেছেন ঝরনা বিশ্বাস (৩০)। এরপর তার মৃত্যুতে চরম অসহায় হয়ে পড়েছে রেখে যাওয়া চার শিশুসন্তান। স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে অনেকটা নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন সুদাস।
রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে এ তথ্য পাওয়া যায়। এই অবস্থায় সন্তানদের খাবার জোটানোর চিন্তায় অনেকটা বেসামাল তিনি। ঝরনা (৩০) সদর ইউনিয়নের রুইয়ারকুল গ্রামের দিনমজুর সুদাস ব্রহ্মের (৩৬) স্ত্রী।
শিশুদের বাবা সুদাষ ব্রক্ষ্মা জানান, এক বছর আগে ক্যানসারে আক্রান্ত হন স্ত্রী ঝরনা। দিনমজুর সুদাসের নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। তাই খুব একটা চিকিৎসা করাতে পারেননি স্ত্রীর। প্রায় দেড়মাস আগে অনেকটা বিনা চিকিৎসায় মারা যায় ঝরনা। মূলত এরপরেই দুর্বিষহ জীবন শুরু হয় সুদাস ও তার চার সন্তানের।
তিনি আরও জানান, তেমন কোনো সহায় সম্পত্তি নেই। দিনমজুরি করে সংসার চালাতে হয়। স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে চার সন্তানকে নিয়ে খুব অসহায় অবস্থায় আছি। না পারছি কাজে যেতে, না পারছি বাচ্চাদের খাবার দিতে। দুই ছেলে-মেয়ে স্কুলে যেত, তাও বন্ধ হয়ে গেছে।
পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া সজল জানান, মা যখন বেঁচে থাকা অবস্থায় স্কুলে যেতাম। মা মারা যাওয়ার পর থেকে আর স্কুলে যেতে পারি না। আমি নিজেই রান্না করি। তবে অনেক সময় না খেয়ে থাকতে হয়।
স্থানীয় মনিমোহন ব্রক্ষ্মা জানান, সুদাষের আয়ের বিকল্প কোনো পথও নেই। এই অবস্থায় ওদের সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতার খুব দরকার। এ ছাড়া শিশুদের ভবিষ্যত নিয়েও সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন।
স্থানীয় বাসিন্দা রুমি সরকার জানান, ঝরনা মারা যাওয়ার পর থেকেই শিশু সুমি ক্ষুধার জ্বালায় কান্নাকাটি করে। আর তিন বছরের নয়নও তার মায়ের জন্য কান্নাকাটি করছে সবসময়। দিনমজুর বাবা কাজ না করলে তাদের চুলা জ্বলে না।
এ বিষয়ে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইয়েদা ফয়জুন্নেছা বলেন, এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারটিরকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে শিশুদের জন্য দুধ কিনে দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের একটি ভিজিডি কার্ড করে দেওয়া হবে।