ইমরুল কায়েস, বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাঙালি জাতির মহান স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে তার স্বাদ উপভোগ করছে গোটা জাতি। বাগেরহাট জেলা ছাত্রলীগ দিবসটি উদযাপনের জন্য বিভিন্ন ধরনের কর্মসুচি পালন করেছে।
দিবসটির আগমন উপলক্ষ্যে সকাল ৭টায় রেল রোডস্থ বাদল চত্তরে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে জেলা ছাত্রলীগ। পরে স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশের জন্য আত্মত্যাগকারী শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত তরা হয়।
পরে শহরের দশানীতে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণ জেলা ছাত্রলীগ। ছাত্ররীগের উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন , ওয়ার্ড, বিভিন্ন কলেজের ইউনিট সমুহ এসময় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে দাড়িয়ে শহীদদের স্বরনে ১ মিনিট নিরবাপা করে পার্শবর্তী বদ্ধভুমিতে শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা জানানো শেষে ছাত্রলীগ আয়োজীত একটি মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রক্ষিন করে এক পথসভায় মিলিত হয়। সেখান জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. মনির হোসেন বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে অনন্য দিন আজ। স্বাধীনতা দিবস বাঙালির জীবনে একই সঙ্গে আনন্দ ও বেদনার, আঁধার পেরিয়ে শিকল ভাঙার দিনও।
সাড়ে চার দশক আগে ১৯৭১ সালে এদিনের প্রথম প্রহরে নিরস্ত্র বাঙালির উপর ট্যাংক, কামান আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। আকষ্মিক এ হামলার তীব্রতা এতই ভয়াবহ ছিল যে, তা স্বাধীনতাকামী বাঙালিকে স্তম্ভিত করেছে। কিছু সময়ের মধ্যে মুক্তিকামী বাঙালির কাছে পৌঁছে যায় স্বাধীনতার ঘোষণা।মধ্যরাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তৎকালীন ইপিআরের সদর দপ্তরের ওয়ারলেসের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর এ আহ্বান ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। শুরু হয় যুদ্ধ, যা পরে রূপ নেয় মুক্তিযুদ্ধে। তিনি ছাত্রলীগকে স্বাধীনতার ৪৫তম এ বার্ষিকীতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার প্রত্যয় নিতে সকল নেতাকর্মীদের আহবান জানান।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক নাহিয়ান আল ওশান বলেন, বাঙালির স্বাধিকারের চেতনার উন্মেষ ঘটেছিল বায়ান্নর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। তা ধাপে ধাপে রূপ নেয় স্বাধীনতার আন্দোলনে। শুরু করে পাকিস্তানি শাসকরা। একইসঙ্গে আগ্রাসন চালানো হয় ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর। বঞ্চনা ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ উঠে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে। ষাটের দশকে প্রতিবাদ পরিণত হয় স্বাধিকারের দাবিতে। এভাবে ধাপে ধাপে স্বাধীনতার ভিত্তি তৈরি হয়। এ আন্দোলনের রূপকার হয়ে উঠেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
একাত্তরের নয়মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষের আত্মদান, ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম আর বিপুল ক্ষয়ক্ষতির মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় বিজয়। বাঙালি লাভ করে কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা। পৃথিবীর মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশের। তিনি আরও বলেন, রক্তের দামে কেনা স্বাধীনতাকে কিছু কুচক্রী মহল ধংস করতে চায়। স্বাধীনতাকে রক্ষার জন্য বিএনপি-জামায়াত- শিবির ্ও তাদের দোশরদের এদেশ থেকে স্বমুলে ধংস করার সপথ নেন।
২৬ মার্চ ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস