বাগেরহাট: বাগেরহাটে ভালোবেসে বিপাকে পড়েছেন এক স্কুলছাত্রী। নিজের মনের মানুষটি তার সাথে এমন প্রতারণা করবে জানা ছিল না তার। লোকলজ্জার ভয়ে প্রেমিকাকে ফেলে এখন প্রেমিক প্রবর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে। এই অবস্থায় ভালবাসার অধিকার আদায় করতে গত তিনদিন ধরে অনশনে বসেছে মেয়েটি। আর এই প্রেম প্রতারণা ঘটেছে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামের গৌরঙ্গ হালদারের কন্যা ঝুমার জীবনে।
ঝুমার পরিবার ও প্রতিবেশিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ৬ মাস ধরে একই উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের দেবেন মন্ডলের পুত্র তারাশংকরের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সন্তোষপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী ঝুমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অল্প দিনের মধ্যে গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে তারা। এ অবস্থায় তারাশংকরের পরিবার বিষয়টি জানতে পেরে ছেলের প্রেমে বাধসাধে। কোন ভাবে বিষয়টি তারা মেনে নিতে রাজি নয়। এমন পরিস্থিতে গত চার-পাঁচ দিন আগে ঝুমা তারাশংকরের সাথে দেখা করতে বাড়ি থেকে বের হয়। এদিন ঝুমা বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুজি শুরু করে। পরে তারা জানতে পারে, ঝুমা ও তার প্রেমিক তারাশংকর থানায় আছে। তাদের চলাফেরা সন্দেহজনক হওয়ায় এলাকাবাসী তাদের থানায় সোপর্দ করেছে।
বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক জানাজানি হলে ঝুমার পরিবার থেকে তারাশংকরের পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান হয়। প্রেমিক তারাশংকরের পরিবার এই প্রেমের বিষয়টি কোন ভাবেই মেনে নিতে রাজি নয়। এ পরিস্থিতে থানা থেকে বেরিয়ে ঝুমাকে রেখে তারাশংকর গা ঢাকা দেন। অন্যদিকে, লোকলজ্জার ভয়ে ঝুমা আর বাড়িতে ফিরে যেতে পারছে না। বিয়ের দাবিতে সে এখন এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন লোকের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। আর এ দাবি আদায়ের জন্য গত তিনদিন ধরে অনশন করছে সে।
ঝুমা জানায়, তার আর বাড়িতে ফিরে যাবার মত কোন সুযোগ নেই। প্রেমের নামে তার সাথে তারাশংকর প্রতারণা করেছে। তারাশংকর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে এখন গা-ঢাকা দিয়েছে। এছাড়া তাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় তারাশংকরের পরিবার তাকে বিয়ের মাধ্যমে মেনে না নিলে তার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই বলেও তিনি জানান।
এ ব্যাপারে তারাশংকরের পরিবারের সাথে কথা হলে তারা জানান, বিষয়টি সমাধানের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে দু’পক্ষেরর আলোচনার কথা রয়েছে।
চিতলমারী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার মো. আনোয়ার পারভেজের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ছেলেটির এখনো বিয়ের বয়স না হওয়ায় ওই প্রেমিক-প্রেমিকা যুগলকে স্থানীয় এক ইউপি সদ্যস্যের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তাদের দুপক্ষের পরিবারের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে বলা হয়েছে।-বিডি প্রতিদিন
২৩ এপ্রিল,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ