বাগেরহাট : ৩ দিন ধরে পুড়ছে সুন্দরবন। ধানসাগর স্টেশনের ২৫ নম্বর কম্পার্টমেন্টের তুলাতলা এলাকায় লাগা আগুন ৫৯ ঘণ্টায়ও পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়নি। এখনো ওই এলাকার বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বলছে এবং ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। তবে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস শুক্রবার সকাল থেকে আবারও কাজ শুরু করেছে।
বুধবার বিকেলে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের তুলাতলা এলাকায় আগুন লাগে। খবর পেয়ে বন বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট দ্বিতীয় দিনের মতো আগুন নেভানোর কাজ শেষ করে তা বন্ধ রাখা হয়।
বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মো. মানিকুজ্জামান সকালে মুঠোফোনে বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় সুন্দরবনে তিনটি ইউনিট নিয়ে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করি। তা চলে রাত তিনটা পর্যন্ত। এরপর তিন ঘণ্টা বিরতি দিয়ে বৃহস্পতিবার আবার ভোর থেকে শুরু হয় কাজ। শুক্রবারও বিভিন্ন স্থানে ধোঁয়া দেখতে পাওয়ায় সকাল থেকে আবার কাজ শুরু করেছি।
তিনি বলেন, সুন্দরবনের যে এলাকায় আগুন লেগেছে তা খুব দুর্গম। প্রায় দুই কিলোমিটার দুরের আড়ুয়ারবাড় খাল থেকে পানি এনে আগুনের এলাকায় ছিটাতে হচ্ছে। এক নাগাড়ে কাজ করতে যেয়ে দমকল কর্মীরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। তাই খুলনা ফায়ার সার্ভিসের কাছে আমরা আগুন নেভানোর কাজে কিছু কর্মী চেয়েছি। তারা ইতোমধ্যে পৌঁছে গেছে। সুন্দরবনের আগুনের বিস্তৃতি খুব বেশি। প্রচণ্ড বাতাসে আগুন ওই এলাকার দক্ষিণ ও উত্তর দিকে ছড়িয়ে গেছে। যার কারণে নেভাতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এছাড়া জনবল ও পানি সরবরাহের পাইপের সঙ্কট রয়েছে।
অবশ্য বনবিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মো. জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, সুন্দরবনে বেশ কিছু এলাকায় এখনো ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আলোর অভাবে গত রাতে আগুন নেভানোর কাজ বন্ধ রাখা হয়। শুক্রবার ভোরে আবার কাজ শুরু হয়েছে।
কত এলাকায় আগুন ছড়িয়েছে এবং তাতে কী ধরনের গাছপালা পুড়েছে তা জানাতে পারেনি জহির উদ্দিন আহমেদ। স্থানীয়রা জানান, এই এলাকার আগুন এখনও অনিয়ন্ত্রিতভাবেই জ্বলছে। আগুন লাগার ৫৯ ঘণ্টা পার হলেও সব এলাকায় পৌঁছাতেই পারেনি বনবিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। ঘটনাস্থলের পশ্চিম পাশে এখনও পৌঁছাতে না পারায় ওই অংশে আগুন কতটা বিস্তৃত তাও বোঝা যাচ্ছে না।
২৯ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস