মঙ্গলবার, ০৩ মে, ২০১৬, ১১:৪৪:৫২

সাপের শরীরে আঘাত করায় সাপের মত ফনা তুলে নাচতে থাকে কিশোরী!

সাপের শরীরে আঘাত করায় সাপের মত ফনা তুলে নাচতে থাকে কিশোরী!

বাগেরহাট প্রতিনিধি : সাপ নিয়ে পৌরাণিক কাহিনী কতই না শোনা যায়।  এখনো এ নিয়ে অন্ধ বিশ্বাস আছে অনেকের মধ্যে।  অনেক সিনেমা-নাটকেও সাপের বিষয়টি অন্য রকমভাবে দেখানো হয়ে থাকে

সাপকে দেবী হিসেবে মনসাকে পূজা করে থাকেন হিন্দু সম্প্রদায়।  সাপের মধ্যে অলৌকিক ক্ষমতা আছে এমন ধারণা হিন্দু সম্প্রদায়ের।  

তবে কখনো কি শুনেছেন, সাপ মারার ঘটনায় কোথাও আগুন লাগার ঘটেছে? একটি সাপ মারাকে কেন্দ্র করে অলৌকিকভাবে বারবার আগুন লাগার ঘটনাসহ নানা অঘটন ঘটেছে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার হিজলা গ্রামে।  এমনটাই দাবি করেছেন ওই গ্রামের আমজনতা।  

তাদের ধারণা, একটি কালকেউটে (গোখরা) সাপ মারাকে কেন্দ্র করে বিপাকে পড়েছেন তারা।  সাপটি মারার পর থেকে অলৌকিকভাবে বাড়িতে বাড়িতে আগুন লাগছে।  এ ঘটনার পর থেকে আগুন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে চারিদিকে।  

আগুন লাগার ভয়ে বাড়ির মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন গ্রামের লোকজন।  আগুন নেভানোর জন্য অনেক বাড়িতে প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে।  এ ঘটনায় এলাকায় চরম ভীতি ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

হিজলা গ্রামের লোকজন জানান, ৮ দিন আগে সবুর খানের মাছ ধরার জালে একটি কেউটে সাপ ধরা পড়ে।  জালসহ সাপটি বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি।

তারা জানান, এসময় সাপটিকে মারার জন্য তার শরীরে আঘাত করা হলে ওই বাড়ির এক কিশোরী মাটিতে গড়াতে থাকে এবং সাপের মতো ফনা তুলে নাচতে থাকে।  এসময় সাপটিকে পিটিয়ে মারা হলে কিশোরীটি তার সন্তানকে মারা হয়েছে বলে চিৎকার করতে থাকে।

গ্রামের লোকজন জানান, এর জন্য ক্ষমা না চাইলে কেউ নিস্তার পাবে না বলেও জানায় ওই কিশোরী। এরপর থেকে ওই বাড়িতে শুরু হয় অলৌকিকভাবে আগুন লাগার পালা।

প্রতিদিন বাড়ির যেখানে সেখানে অলৌকিকভাবে আগুন লাগে।  আগুনে অনেক গাছপালা ও খড়ের পালা পুড়ে ছাই হয়েছে।  

গত ৮ দিনে ওই গ্রামের সবুর খান, ইউসুফ খান, সেলিম খান, আসাদ আলী, আলমগীর খান, সোহরাব আলী ও দীন খানের বাড়িতে অলৌকিকভাবে ১৪/১৫ বার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন ওই বাড়ির লোকজন।

এমন আতঙ্কে ওঝা-বৈদ্যের বাড়িতে চলছে দৌড়ঝাঁপ। এতে ভীতি ও চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে গ্রামে।  বিষয়টি ঘিরে জনমনে নানা রহস্যের জন্ম হচ্ছে। প্রতিদিন শত শত উৎসুক জনতা ভিড় জমাচ্ছেন ওই  গ্রামে, যাদের অধিকাংশই হচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের নর-নারী।

এ ব্যাপারে হিজলা ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আজমীর হোসেন বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এটি একটি  অলৌকিক ঘটনা।  একটি সাপ মারাকে কেন্দ্র করে বারবার আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে।   

তবে সাপ মারাকে কেন্দ্র করে এমন ঘটনার নজির নেই বলে জানান প্রাণী ও পাখি বিশেষজ্ঞরা।  এর বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তিও নেই।  

চিতলমারী দারুল উলুুম মাদরাসার বড় হুজুুর অধ্যক্ষ মো. আব্দুর রহমান জানান, এসব জিনের কারবার হতে পারে।  এ ঘটনায় তদবির দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আনোয়ার পারভেজ জানান, বিজ্ঞানের যুগে এ ধরনের ঘটনা বিশ্বাসযোগ্য নয়। আগুন লাগার পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে।  বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।  
৩ মে, ২০১৬/এমটনিউিজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে