বরগুনা থেকে : বরগুনা সদরে রাস্তায় ফেলে রিফাত শরীফকে প্রকা'শ্যে কু'পিয়ে হ'ত্যার ৬০ দিন পূর্ণ হলো আজ। গত ২৬ জুন নৃ'শং'স এ হ'ত্যাকা'ণ্ডের ঘটনায় দেশব্যাপী তো'লপাড় সৃষ্টি হলেও এ মামলার এজাহারভুক্ত চার আসামিকে এখনও গ্রে'ফতার করতে পারেনি পুলিশ।
গ্রে'ফতার করা হয়েছে রিফাত হ'ত্যার প্রধান সাক্ষী ও তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে। মামলার প্রধান সাক্ষীকে গ্রে'ফতার ও জবানবন্দি নিয়ে সমালোচনা হলেও তাকে নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছে পুলিশ। অন্য আসামিরা অধরাই থেকে যাচ্ছে দিনের পর দিন।
রিফাত হ'ত্যা মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহমেদ ওরফে নয়ন বন্ড ব'ন্দুকযু'দ্ধে নিহ'ত হয়েছেন। একাধিক পক্ষের দাবি, নয়ন ব'ন্দুকযু'দ্ধে নিহ'ত হননি, তাকে খু'ন করা হয়েছে। একটি প্রভাবশালী মহলকে বাঁ'চাতে নয়নকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, একই উদ্দেশে গ্রে'ফতার করা হয়েছে রিফাতের স্ত্রী মিন্নিকেও। এখনও স্পষ্ট হয়নি রিফাত হ'ত্যার রহস্যজট। স্পষ্ট হয়নি হ'ত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কারণ। এক ধরনের ধোঁয়াশায় কেটে গেছে ৬০ দিন।
নয়ন বন্ড গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত এবং এই হ'ত্যাকা'ণ্ডে সম্পৃক্ততা রয়েছে এমন কয়েকজনকে সিসিটিভি ফুটেজে শনাক্ত করা হলেও তাদের আইনের আওতায় আনেনি পুলিশ। হ'ত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেফতারের পর তাকে ঘিরেই ছিল পুলিশের সব তৎপরতা।
মিন্নির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের ‘কার্যসিদ্ধি’ মনোভাবের কারণে অন্য আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়টি অনেকটাই চাপা পড়ে গেছে। এখন রিফাত হ'ত্যার সব দায় যেন মিন্নির ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। নিম্ন আদালত ও হাইকোর্টে বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও তার জামিন হচ্ছে না।
২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে কু'পিয়ে হ'ত্যা করা হয় রিফাত শরীফকে। ওই ঘটনার দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী তাকে রা'ম দা দিয়ে কো'পাচ্ছে।
ঘটনার দিন থেকেই নি'খোঁজ হয় এ দুই যুবক। এর ছয় দিন পর ২ জুলাই নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে কথিত ব'ন্দুকযু'দ্ধে নিহ'ত হয়। ওই দিন রাতেই রিফাত ফরাজীকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। রিফাত হ'ত্যার পর দিন তার বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
এ ছাড়া সন্দেহভাজন অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আ'সামি করা হয়। মামলার এজাহারভুক্ত ১২ আসামিসহ এ পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জনই স্বী'কারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এজাহারভুক্ত চার আসামি এখনও অধরা।
মামলার এজাহারভুক্ত ৫নং আসামি মুছা বন্ড, ৭নং আসামি মুহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, ৮নং আসামি রায়হান ও ১০নং আসামি মোহাম্মদ রিফাত হাওলাদার এখনও রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ ছাড়া সিসিটিভি ফুটেজে শনাক্ত নাইম ও বন্ড গ্রুপের অন্য কয়েকজনকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শনাক্ত করার পরও তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
এজাহারভুক্ত চার আসামিকে গ্রেফতার করতে না পারার বিষয়ে রিফাত হ'ত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বরগুনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির বলেন, এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের তৎপরতা শুরু থেকেই অব্যাহত ছিল। বাকিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
রিফাত হ'ত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেফতার এবং রি'মান্ডে গিয়ে তার স্বী'কারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার পর থেকে মামলা ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। ১৬ জুলাই সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাসা থেকে মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তার বক্তব্য রেকর্ড করতে বরগুনা পুলিশলাইনসে নিয়ে যায় পুলিশ।
এর পর দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার জি'জ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় মিন্নিকে রিফাত শরীফ হ'ত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। পর দিন আদালতে হাজির করে রি'মান্ড ও স্বী'কারোক্তমূলক জবানবন্দি নেয় পুলিশ। মিন্নির জামিনের আবেদনের বিপরীতে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের জন্যই পুলিশের আগ্রহ ছিল বেশি।