বরগুনা : মাছ চুরির অপবাদ সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন এক তরুণ। ঘটনাটি ঘটেছে বরগুনার পাথরঘাটায়।
গত বৃহস্পতিবার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন মিঠু মণ্ডল (২০) নামের এক তরুণ। মিঠু মণ্ডল উপজেলার চরদুয়ানী ইউনিয়নের হোগলাপাশা গ্রামের মনোজ মণ্ডলের একমাত্র ছেলে।
এর আগে সকাল পৌনে সাতটার দিকে বাড়ির পাশে ঘাটের খালে পাতা চাঁই থেকে মাছ চুরির অপরাধে মিঠু মণ্ডলকে বেদম মারধর করা হয়।
নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে প্রতিবেশী হারুন হাওলাদার, তার দুই ছেলেসহ চার-পাঁচজন মিলে তাকে বেদম মারধর করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে সাতটার দিকে বাড়ির পাশের ঘাটের খালে পাতা চাঁই থেকে মাছ চুরির অপরাধে মিঠু মণ্ডলকে মারধর করা হয়। মিঠুকে নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে প্রতিবেশী হারুন হাওলাদার এবং তার দুই ছেলে জয়নাল হাওলাদার, জসিম হাওলাদারসহ চার-পাঁচজন লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করেন।
তারা বলেন, এতে মিঠুর পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে লাঠির দাগ পড়ে যায়। একইসঙ্গে লাঠির আঘাতে শরীরের কয়েকটি স্থানে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। মাছ চুরির এ অপবাদ ও নির্যাতন সইতে না পেরে ওইদিন সকাল আটটার দিকে বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন মিঠু মণ্ডল।
চরদুয়ানী ইউপি সদস্য শিরিন আক্তার শুক্রবার বলেন, তিনি মৃত্যুর খবর শুনেই বৃহস্পতিবার সকালে মিঠুর বাড়িতে যান। এ সময় মিঠুর পিঠে ১০-১২টি লাঠির আঘাতের চিহ্ন দেখেছেন।
তিনি বলেন, শরীরের বিভিন্ন অংশে কাঁদাসহ রক্ত জমাট অবস্থাও ছিল। একই সময় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন স্থানীয় দুই শিক্ষকসহ সাত-আটজন ব্যক্তি।
এ ঘটনায় আর্তনাদ করছেন মিঠুর মা শিখা রানী। মিঠুর বাবা মনোজ মণ্ডল ও ছোট বোন শুক্লা মণ্ডলও বিলাপ করছেন।
মিঠুর মামা ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী সুবোধ হাওলাদার গণমাধ্যমকে বলেন, মিঠু শান্ত প্রকৃতির ছেলে ছিল। কিন্তু প্রতিবেশী হারুন হাওলাদার ও তার দুই ছেলে তাকে বাঁচতে দিল না। মিথ্যা অপবাদ ছড়িয়ে মিঠুকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করল।
এ ব্যাপারে পাথরঘাটা থানা সূত্র জানায়, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
২৩ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম