বৃহস্পতিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৩:৩৮:৪৬

‘স্বেচ্ছায় না ফিরলে বাকিদেরও একই পরিণতি’

 ‘স্বেচ্ছায় না ফিরলে বাকিদেরও একই পরিণতি’

বরিশাল : স্বেচ্ছায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরে না আসলে বাকিদেরও একই পরিণতি হবে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ।

তিনি বলেন, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসলে জলদস্যুদের আর্থিকভাবে পুনর্বাসন করা হবে।  এখনো যারা না ফেরার সিদ্ধান্তে রয়েছেন, তাদের চরম পরিণতি ভোগ করতে হবে।  

বৃহস্পতিবার যমুনা টিভির মধ্যস্থতায় সুন্দরবনের জলদস্যু শান্ত ও আলম বাহিনীর ১৪ সদস্যের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে র‌্যাব ডিজি এ হুঁশিয়ারি দেন।

বরিশাল নগরীর র‌্যাব-৮ কমপ্লেক্সে দস্যুরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের হাতে অস্ত্র ও গুলি জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেন।

র‌্যাব ডিজি বলেন, সুন্দরবন ঘিরে যারা জীবিকা নির্বাহ করে, তাদের কোটি কোটি টাকা লুটে নিয়েছে দস্যুরা।  দুটি বাহিনী আজ আত্মসমর্পর্ণ করেছে। আরো চারটি বাহিনী তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।  আশা করছি, তারাও খুব শিগগিরই আত্মসমর্পণ করবে।

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এখানে ৮৯টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।  এ সময় দুই শতাধিক দস্যু গ্রেফতার, বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার এবং দুই শতাধিকের বেশি দস্যু নিহত হয়েছে।

বেনজীর আহমেদ বলেন, আমাদের অত্যাধুনিক বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকা যাবে না।  যারা এখনো অপতৎপরতা চালাচ্ছে, তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আহ্বান জানাচ্ছি।

হুঁশিয়ারি দিয়ে র‌্যাব প্রধান বলেন, ফিরে না এসে দস্যুতার দুঃসাহস দেখালে তাদের পরিণতি ভালো হবে না।  কোনো ধরনের অপতৎপরতা বরদাশত করা হবে না।  কেউ জান নিয়ে ফিরে যেতে পারবে না।

তিনি বলেন, ফিরে আসা দস্যুদের মধ্যে হত্যা ও অনৈতিককাজের মামলায় যারা জড়িত নয়, তাদের প্রতি সহনশীল হতে সরকারের কাছে অনুরোধ করেছি।  এর আগে যারা ফিরে এসেছে, এরই মধ্যে অনেকেই জামিন নিয়ে সমাজের মূল ধারায় রয়েছেন।

র‌্যাব প্রধান বলেন, দস্যুদের সমাজে পুনর্বাসনে সরকার কাজ করছে।  এ জন্য সমাজের অন্যদেরও এগিয়ে আসতে হবে।  তারা যাতে সমাজের মূল ধারায় মিশতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।

একইসঙ্গে দস্যুদের হাতে নিহতদের পরিবারকে সহায়তা করার বিষয়টিও বিশেষভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এর আগে প্রথমে বাহিনী প্রধান আবদুল বারেক তালুকদার শান্তর নেতৃত্বে তার দলের ১০ সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার ঘোষণা দেন।  

এরপর আলম তার বাহিনীর চার সদস্যকে নিয়ে আত্মসমর্পণ করেন।  তাদের সবার বাড়ি বাগেরহাটের মংলায়।

এ সময় জলদস্যুরা ২০টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১ হাজার ৮০০ রাউন্ড গুলি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।

নানা কারণে সুন্দরবন দাপিয়ে বেড়ানো শান্ত ও আলম বাহিনী তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে যমুনা টিভির মাধ্যমে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করে।  আজ তার আনুষ্ঠানিকতা হলো।

দুই জলদস্যু বাহিনীর আত্মসমর্পণের খবরে স্বস্তি ফিরে এসেছে সুন্দরবনসংলগ্ন উপকূলে।

এর আগে গত ১ জুন যমুনা টিভির মধ্যস্থতায় সুন্দরবনের কুখ্যাত মাস্টার বাহিনীর ১০ সদস্য আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে।  

মাস্টার বাহিনীর প্রধানসহ ১০ সদস্য ৫২টি অস্ত্র ও ৫ হাজার গুলি, ট্রলারসহ অন্যান্য উপকরণ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।

এছাড়া যমুনা টিভির মধ্যস্থতায় ইলিয়াস এবং মজনু বাহিনীর সদস্যরাও তাদের আগ্নেয়াস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেন।
৮ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে