বরিশাল থেকে : আমার ভাগ্য, প্রেসিডেন্ট আমার বাড়িতে এসেছিলেন। এটা টাকা দিয়ে পাওয়া যায় না। আমি খুব খুশী।’ বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রাকুদিয়া গ্রামে শিউলী বেগমের বাড়ি পরিদর্শনে যান। এরপর এভাবেই নিজের প্রতিক্রিয়া জানান শিউলী বেগম। ওই এলাকায় বাল্যবিয়ে হয় কিনা জিম ইয়ং কিম তাও জানতে চান বলে জানান তিনি।
তিন দিনের সফরে রবিবার বিকালে বাংলাদেশে আসেন জিম ইয়ং কিম। মঙ্গলবার তিনি বরিশাল সফর করেন। সকাল সাড়ে ৮টায় হেলিকপ্টারে বরিশাল বিমানবন্দরে নেমে সরাসরি বাবুগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রাকুদিয়া গ্রামের ‘দক্ষিণ রাকুদিয়া গ্রাম সমিতি’ পরিদর্শনে যান তিনি। সেখানে সমিতির সদস্যরা তাকে স্বাগত জানান।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত উন্নয়ন কর্মসূচির উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন জিম ইয়ং কিম। উপকারভোগী সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। সমিতির কার্যালয়ে তিনি উপকারভোগী শিউলী বেগম, সোনিয়া বেগমের বক্তব্য শোনেন।
শিউলী বেগম জানান, তার স্বামীর নাম আনিস ফারাজী। তিনি কৃষি কাজ করেন। দুই ছেলে ও এক মেয়ে তাদের। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত উন্নয়ন কর্মসূচি থেকে সাহায্য পেয়েছেন তিনি। এখন তারা ভালোই আছেন।
জিম ইয়ং কিমের সঙ্গে কথা বলা প্রসঙ্গে শিউলী বেগম বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক প্রধান প্রথমেই এসে আমার খোঁজ নেন। বয়স কতো জানতে চান। কবে বিয়ে হয়েছে, ছেলে-মেয়ে কয় জন, এখানে বাল্য বিয়ে হয় কিনা জানতে চান।’
‘মেয়েকে ১৫ বছরে বিয়ে দেবেন কিনা’ জিম ইয়ং কিমের এমন প্রশ্নের জবাবে শিউলী বেগম তাকে বলেন, ‘আমার এক ছেলে কারখানায় কাজ করে। আরেক ছেলে অস্টম শ্রেণিতে পড়ে। আরেক মেয়ে ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ে। আমি চাই আমার মেয়ে লেখাপড়া করুক। আমি কখনোই মেয়েকে ১৫ বছরে বিয়ে দেবো না।’
শিউলী আরও বলেন, ‘এসময় বিশ্ব ব্যাংক প্রধান জানতে চান কীভাবে আমি গরু পালন করি। আমি তাকে এ বিষয়ে বলেছি।’
পরিদর্শনকালে বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট বলেন, বাংলাদেশের মানুষ খুব পরিশ্রমী, সহজে পিছিয়ে পড়েন না। তাঁরা ভালো কাজ করতে জানেন। বাংলাদেশের মানুষের বর্তমান এ অবস্থা বিশ্বব্যাংকে আরও অর্থায়নে উৎসাহিত করছে।
জিম ইয়ং কিম বলেন, ‘এখানকার দরিদ্র নারীদের পরিবর্তন দেখে আমি খুব খুশি হয়েছি।’
বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এই দরিদ্র নারীরা প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। মাছের চাষ, গাভি পালনসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তাঁরা। সুবিধা নিয়েছেন—এমন নারীদের সঙ্গে আলাপ করে বুঝলাম, এই নারীরা এখন আত্মপ্রত্যয়ী। তাঁরা এখন তাঁদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে পারছেন। তাঁদের আরও উন্নয়ন দেখতে চাই।’
১৮ অক্টোবর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি