 
                                        
                                        
                                       
                                        
                                             
                                                                                    
বরিশাল থেকে : আমি আওয়ামী লীগের লোক। আমার পরিবারের কেউই আওয়ামী লীগের বাইরে নেই- তারা অন্য কোন দলও করেন না। তবু আমার বিরুদ্ধে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করে আসছে বলে মন্তব্য করেছেন বরিশাল-৪ আসনের (হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জ) সাংসদ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ নাথ।
তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে রটাচ্ছে নানান মিথ্য ও বানোয়াট কথা। বলছে, ‘আমি বিএনপি-জামায়াত সম্পৃক্ত।’ তবে এসব মনগড়া কথা আদৌ সত্য নয়। এগুলো বলা হচ্ছে আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংসের জন্য ব্যক্তিগত আক্রোশে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মেহেন্দীগঞ্জের উপজেলা পরিষদের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলনে পঙ্কজ নাথ এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের এ নেতা।
২০১৪ সালের নির্বাচন পূর্ববর্তী শাহবাগে গাড়িতে আগুন দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, যারা অভিযোগ করছেন- তারাই জামায়াত-বিএনপির দোসর, নব্য আওয়ামী লীগ। বিহঙ্গ পরিবহনে অভিযোগকারীদেরই একাধিক গাড়ি রয়েছে। অভিযোগকারীরা বিএনপি-জামায়াতের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছে বলে তিনি দাবি করেন।
সদ্য চানপুর ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের বিষয়ে পঙ্কজ নাথ এমপি বলেন, যারা ২০০১ সালে নির্বাচন পরবর্তী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা করেছে- তাদেরই মনোনয়ন দেয়ায় তৃণমূল কর্মীরা ক্ষুদ্ধ হয়েছেন।
তিনি সম্মেলনে একাধিক নেতাকর্মীকে দেখিয়ে বলেন, এরা সবাই সে সময়ে নির্যাতনের শিকার। অথচ সেই নির্যাতনকারীদের টাকার বিনিময়ে এবার মনোনয়ন দিয়ে প্রকৃত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। এবার কোন নির্বাচনী সভায় তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলেও জানান তিনি।
পঙ্কজ নাথ বলেন, তাদের নেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহকে ভুল বুঝিয়ে বিএনপি-জামায়াতের দোসর হিসেবে চিহ্নিতরা মনোনয়ন বাণিজ্য করে দলকে পরাজয় উপহার দিয়েছে। আমার ওপর অভিযোগ আনা হয়েছে, আমার সাথে নাকি হাওয়া ভবনের সম্পর্ক খুব ঘনিষ্ঠ ছিল। তাহলে আমার ওপর এত মামলা কেন হলো- বলে পাল্টা প্রশ্ন রাখেন পঙ্কজ।
বরিশাল-৪-এর সাংসদ বলেন, যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে তারা আওয়ামী লীগকে বিনষ্ট করতে চায়। ভূঁইফোড় এসব আওয়ামী লীগ নেতারা ভালো পদ-পদবী পাওয়ার পর তৃনমূল আওয়ামী লীগকে নষ্ট করার পাঁয়তারা করছে। যেসব বিএনপি নেতা বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে, সেসব নেতাদের বানানো হয়েছে কোন কোন ইউনিয়নের সভাপতি-সম্পাদক।
তার ওপর মিথ্যা অপবাদ দেয়ায় এক পর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক। কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দুষ্কৃতিকারী একটি মহল আমার রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টায় আছেন।
তিনি বলেন, যেসব লোকজন ৪৫ লাখ টাকায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচনে মনোনয়ন বিক্রি করতে পারে, তারা আর যাই হোক- আওয়ামী ঘরানার হতে পারে না। আমরা চাই, ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে আগাতে। যারা আমার ওপর মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন, তারাই মুক্তিযোদ্ধা জাকির হোসেনকে মারধর করে। এতে সে দীর্ঘদিন ঢাকায় চিকিৎসারত ছিলেন। এছাড়া আরজু বেপারী হত্যার সাথে তারাই জড়িত।
সংসদ সদস্য আরো বলেন, দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে যারা আছেন, তাদের উচিৎ না বিভ্রান্তিমূলক ও উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে বক্তব্য দিয়ে দলের ক্ষতি করা। মেহেন্দীগঞ্জে আওয়ামী লীগের সাথে সংসদ সদস্যর অদৃশ্য দূরত্ব তৈরি করছে একটি চক্রান্তকারী দল। আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের আওয়ামী অভিভাবক আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহকে ভুল বোঝাচ্ছে তারা।
সংবাদ সম্মেলনে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সম্পাদকসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মইদুল ইসলামের সংবাদ সম্মেলনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
২৬ মে, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএস