বরিশাল: বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় বিএনপি ও ধানের শীষের স্লোগান দিয়ে তিনটি স্থানে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। সেই সঙ্গে পাকা তিনটি সড়কের বিভিন্ন স্থান কেটে যোগাযোগব্যবস্থা বিছিন্ন করে ফেলা হয়। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার মাহিলাড়া নলচিড়া এলাকার সরকারের বাড়ির কাছে, সরিকল ইউনিয়নের হোসনাবাদ স্টিমার ঘাট চকিদারবাড়ি এলাকা ও খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের মেদাকুল গ্রামের দ্বীনবন্ধু সাহার বাড়ির কাছে দীঘিরপাড় এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় গৌরনদী থানায় গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাহাবুবুর রহমান জানিয়েছেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে মাহিলাড়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সজল সরকারের বাড়িসংলগ্ন মাহিলাড়া-নলচিড়া সড়কের পাশে সাত-আটটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ সময় একদল লোক সড়কের লালপোল এলাকায় সড়ক কেটে ফেলে।
একই রাত সাড়ে ১২টার দিকে খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের মেদাকুল গ্রামের দ্বীনবন্ধু সাহার বাড়ির কাছে দীঘিরপাড় নামক এলাকায় পাঁচ-সাতটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় অজানা ব্যক্তিরা ইল্লা হতে দোনারকান্দি সড়কের দীঘিরপাড় অংশ কেটে বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
এ ছাড়া রাত দেড়টার দিকে সরিকল ইউনিয়নের হোসনাবাদ স্টিমার ঘাট চকিদারবাড়ির পাশে ব্রিজের কাছে পাঁচ-সাতটি বোমা ও কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে অজানা দুর্বৃত্তরা। এ সময় গৌরনদী হোসনাবাদ সড়কের স্টিমার ঘাট চকিদারবাড়ি এলাকায় রাস্তা কেটে যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দেয় তারা।
উত্তর হোসনাবাদ এলাকার আহমেদ আলী জানান, শুক্রবার গভীর রাতে কে বা কারা গৌরনদী হোসনাবাদ সড়কের স্টিমার ঘাট চকিদারবাড়ি এলাকায় রাস্তা কেটে যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দেয়। রাতে ওই এলাকায় বেশ কিছু লোকের আনাগোনা টের পাওয়া গিয়েছিল।
হোসনাবাদের ঘটনাস্থলে পাশের বাড়ির গৃহবধূ রিনা বেগম বলেন, ‘রাস্তায় লোকজনের আনাগোনা টের পেয়ে বাইরে বের হওয়ার জন্য দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ ছাড়া তারা ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করে এবং নানা ভয়ভীতি দেখায়। তাই আমরা ভয়ে ঘর থেকে কেউ বাইরে বের হইনি।’
ইউনিয়নের হোসনাবাদ এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, চকিদারবাড়ির কাছে ব্রিজের কাছে পাঁচ-সাতটি বোমা ও কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। এতে গ্রামের মানুষের মধ্যে একধরনের আতঙ্ক দেখা দেয়।
খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকন সিদ্দিকুর রহমান গতকাল বলেন, ‘সকালে হাঁটতে বের হলে রাস্তা কাটা দেখতে পাই। রাতে কে বা কারা, কী উদ্দেশ্যে রাস্তা কেটেছে তা বুঝে উঠতে পারিনি।’
বোমা হামলা ও রাস্তা কাটার কথা নিশ্চিত করে গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছে। এ ঘটনায় কারা জড়িত, তা চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তবে এ ঘটনায় গতকাল বিকেল পর্যন্ত কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি জানিয়েছেন পরিদর্শক মাহাবুবুর রহমান।
সূত্র: কালের কণ্ঠ