বরিশাল থেকে : বরিশাল নগরীতে এক সন্তানের জননী গৃহবধূ আমেনা আক্তার ঝুমার (২২) রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর থেকে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ-শেবাচিমের লাশঘরে তার মৃতদেহ রেখে পালিয়েছে নিহতের স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকরা।
এটিকে পরিকল্পিত হত্যা বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের স্বজনরা। তিনি নগরীর বান্দ রোডের কেডিসি এলাকার বাসিন্দা মিলন হাওলাদারের স্ত্রী। শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে শেবাচিম হাসপাতালে গৃহবধূর মৃত্যু হয়।
নিহতের ভাই মফিজুল ইসলাম জানান, ৭ বছর আগে সদর উপজেলার চরমোনাইর বাসিন্দা খোরশেদ মীরের মেয়ে আমেনা আক্তার ঝুমার বিয়ে হয় নগরীর কেডিসির বাসিন্দা নূর মোহাম্মদের ছেলে মিলন হাওলাদারের সঙ্গে। বিয়ের এক বছর পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না।
তিনি বলেন, যৌতুকসহ বিভিন্ন কারণে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকরা গৃহবধূর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিল। ঘটনার দিন শুক্রবার রাত ১১টার দিকে কেডিসিতে শ্বশুরের ঘরে স্বামী মিলনের সঙ্গে ঝুমার ঝগড়া হয়। এ সময় ঝুমাকে মারধর করে মিলন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঝুমা ও তার স্বামী তাদের সন্তান নিয়ে বান্দ রোডে বঙ্গবন্ধু উদ্যান সংলগ্ন ভাড়া বাসায় যান।
নিহতের ভাই মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘তার বোন ভাড়া বাসায় ভাত খাওয়ার মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তিনি বমিও করেন। তখন স্বামী মিলন তাকে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে বাইরে বেরিয়ে যান। রাত সাড়ে ১২টার দিকে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকরা তাকে উদ্ধার করে শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক গৃহবধূকে মৃত ঘোষণা করেন। গৃহবধূর মৃতদেহ লাশঘরে নেয়ার পরপরই হাসপাতাল থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় তার স্বামীসহ অন্যরা। ফলে এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের বাবার বাড়ির স্বজনরা।
কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই ফরিদ আহমেদ বলেন, এটি হত্যা কিনা সেটা এখনও আমরা নিশ্চিত নই। তবে বিষক্রিয়ার কারণে গৃহবধূর হাতের আঙুল ও নখ হলুদ হয়ে গেছে। অবশ্য ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। যে কারণে মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তাই মৃতদেহের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর রহস্য বেরিয়ে আসবে।