সালেহ টিটু, বরিশাল : পবিত্র রমজান মাসজুড়ে রোজাদারদের বিনামূল্যে সেহরি খাইয়ে চলেছেন বরিশালের গৌরনদীর মাতবর হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের মালিক আব্দুর রশিদ মাতবর। সৃষ্টিকর্তার কৃপা লাভের আশায় রোজাদারদের সেহরি খাওয়ানোর মাধ্যমে আত্মতৃপ্তি পাচ্ছেন বলে জানান এই হোটেল মালিক। তবে যারা বাসে করে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে গৌরনদী এসে নামেন মূলত তারাই রশিদ মাতবরের হোটেলে সেহরি খেয়ে থাকেন।
উপজেলার চাঁদশী দক্ষিণ গোবর্ধন গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ মাতবর। তার সংসারে স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। এক ছেলে তাকে হোটেলের কাজে সাহায্য করে। আর দুই সন্তান লেখাপড়া করছে।
আব্দুর রশিদ বলেন, ‘বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের পাশে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডে আমার হোটেল। ঢাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা যাত্রীবাহী বাস সেহরির সময় এখানে থামে। আমার হোটেলে সেহরির জন্য ভাত, ডাল, মাছ, মুরগি, খাসির মাংস ও সবজি থাকে। সবাইকে ভাতসহ চারটি আইটেম দেওয়া হয়। এভাবে প্রতিদিন ৫০-৭০ জনকে বিনামূল্যে সেহরি খাওয়ানো হয় এই হোটেলে।’ প্রতিদিন সেহরি খেতে আসা লোকের সংখ্যা বাড়ছে বলেও জানান তিনি।
আব্দুর রশিদ আরও বলেন, ‘১২ মাসের মধ্যে ১১ মাসই ব্যবসা করি। একটি মাস ব্যবসা না করলে তেমন কিছু হবে না। আল্লাহর রহমতে পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালোভাবে দিন কেটে যাচ্ছে। এমনকি হোটেলে যারা কর্মরত, তাদেরও ঠিকমতো মজুরি দিচ্ছি। কোনও সমস্যা হচ্ছে না। বেঁচে থাকার আগ পর্যন্ত প্রতিবছর রোজাদারদের এভাবে বিনামূল্যে সেহরি খাওয়াতে চাই।’
গৌরনদীর স্থানীয় সাংবাদিক গিয়াস উদ্দিন মিয়া বলেন, ‘মাতবর হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে বিনামূল্যে সেহরি খাওয়ার বিষয়টি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই এই মহৎ কাজের জন্য হোটেল মালিককে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে রোজা এলেই সব জিনিসের দাম বেড়ে যায়। ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের জিম্মি করেন। আর একজন সামান্য হোটেল ব্যবসায়ী তার পুঁজি খাটিয়ে বিনামূল্যে সেহরি খাওয়াচ্ছেন রোজাদারদের। এ থেকে দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের অনেক কিছু শেখার আছে।’ -বাংলা ট্রিবিউন