গৌরনদী (বরিশাল) : পল্লী বিদ্যুতের ছেড়া তারে জড়িয়ে মা-বাবার অকাল মৃত্যুতে অসহায় হয়ে পড়েছে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রমজানকাঠি গ্রামের ৪ অবুঝ শিশু। তাদের মধ্যে ৩ শিশুর কান্না থামলেও কান্না থামেনি দেড় বছর বয়সের শিশু জেসমিনের। সে দুধ পানের জন্য তার মাকে খুঁজছে।
তাদের বাড়িতে এখনো ভিড় করছেন আত্মীয় স্বজনরা ও এলাকার মানুষ। অনেকেই অনাথ শিশুদের মাথায় হাত বুলিয়ে চোখের পানি মুছছেন। আর বিত্তবানদের কাছে অবুঝ শিশুর পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান তার স্বজনরা।
রবিবার সকালে বরিশাল জেলার গৌরনদীর সীমান্তবর্তী বাবুগঞ্জ উপজেলার রমজানকাঠী গ্রামে শিশুদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, দেড় বছরের শিশু কন্যা জেসমিন বুকের দুধ পানের জন্য হন্য হয়ে খুঁজছে তার মাকে। সাত বছর বয়সের হাবিবা এখনও বুঝছে না তার মা ও বাবা পৃথিবীতে বেঁচে নেই। মৃত্যুর খবরে ওই বাড়িতে ছুটে আসা শত শত মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে আট বছরের শিশু কন্যা হামিদা খানম। বার বার জিজ্ঞাসা করছে বাবা ও মা কোথায়? ওই দম্পতির ১১ বছরের জ্যেষ্ঠ ছেলে রবিন হাওলাদার অঝরে কাঁদছেন মা ও বাবার মৃত্যুতে। তাকিয়ে থাকছেন নিজের অবুঝ বোনদের মুখের দিকে।
বাবুগঞ্জ উপজেলার বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নবাসী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে কর্মরত বিদ্যুৎকর্মীদের ওপর। তাদের দায়িত্ব ও অবহেলার কারণেই বাবা ও মা অকালে প্রাণ হারিয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
জানা যায়, বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের রমজানকাঠী গ্রামের ভ্যানচালক কামাল হোসেন হাওলাদার (৪০) চরম দৈন্যতার মধ্যে জীবন-যাপন করতেন। গত ১১ জুলাই দুপুরে কামালের স্ত্রী মমতাজ বেগম (৩০) বাড়ির পাশের একটি ক্ষেতে পাট শাক তুলতে যায়। ওই ক্ষেতের মধ্যে আগে থেকেই বিদ্যুতের তার ছিরে পড়ে রয়েছিলো। ফলে মমতাজ বেগম বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছটফট করতে থাকে। বিষয়টি দেখে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে যায় স্বামী কামাল হোসেন। এসময় ওই দম্পতি পাট ক্ষেতে বসেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়।