বরিশাল: বরিশালের গৌরনদীতে বিধবা মরিয়ম বেগম ৭০ বছরের বৃদ্ধা। তারপরও পেটের দায়ে কাজের সন্ধা'নে কঠোর লকডাউনেও ঘর থেকে বের হচ্ছেন এবং ইটভা'ঙ্গার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
বয়সের ভারে ইট ভা'ঙ্গার কাজটিও তেমন ভাবে করতে না পারলেও, এ কাজ করে যে টাকা রোজগার করছেন তা দিয়ে কোনোভাবে তার অ'র্ধাহার অনা'হারে দিন কা'টছে।
এমন ক'ষ্টের জীবনের কথা জানতে পেরে খো'দ গৌরনদী মডেল থানার ওসি আফজাল হোসেন বৃদ্ধার পাশে গিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। ওসি আফজাল হোসেনের মানবিক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের বাউরগাতি গ্রামের মৃত হালান সরকারের স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৭০) ছিলেন সচ্ছল পরিবারের একজন গৃহিণী। চার কন্যা ও স্বামীকে নিয়ে সুখেই কাটছিল তার দিনকাল।
মরিয়ম বেগম জানান, স্বামী থাকা অবস্থায় চার কন্যার বিয়ে দেন। পরবর্তীতে স্বামীর রোজগার দিয়ে দুজনের খেয়ে পরে ভালই ছিলেন। কিন্তু বিধিবাম স্বামীর মৃত্যুতে মুহূ'র্তেই তার সুখের সংসার অ'ন্ধকারে নিম'জ্জিত হয়ে যায়। ৫ বছর আগে স্বামী হালান সরকার মা'রা যান। মেয়েদের তেমন সচ্ছল পরিবারে বিয়ে হয়নি। তারা নিজেদের সংসার নিয়েই টা'নাটা'নিতে আছে। তাকে দেখার সুযোগ নেই। স্বামীর মৃত্যুর পরে জীবন বাঁ'চানোর জন্য নিজেকেই জীবন সং'গ্রামে না'মতে হয়েছে।
দৈনিক কত টাকা আয় হয় জানতে চাইলে মরিয়ম বলেন, সারা দিন ইট ভা'ঙলে ৫০/৬০ টাকা পাই। শরীর ভাল না থাকলে কাম কম করলে ৩০/৪০ টাকা কামাই করি। এতে কি সংসার চলে জানতে চাইলে বলেন, আল্লা চালান।
এই বয়সে তার হাতু'ড়ি জা'গানোর শক্তি নেই বললেই চলে তবুও জীবন সংগ্রামে বেঁ'চে থাকার জন্য ইট ভা'ঙ্গার কাজ করেন। তার ভরণপোষণ দেয়ার মতো কেউ নাই।
বার্থী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য বদরুজ্জামান খান সবুজ বলেন, মরিয়ম বেগম খুবই অস'হায়। তাকে ভরণপোষণ করার মতো কেউ নেই। ইট ভে'ঙ্গে সামান্য ৪০-৫০ টাকা যা আয় করেন তাই দিয়ে চলেন। তার দুরবস্থা দেখার কেউ নেই। তাকে (মরিয়ম) একটা বয়স্ক ভাতার কা'র্ড করে দেয়া হয়েছে।
এ সময় অসহায় মরিয়ম বেগমের কাছে তার অসহা'য়ত্বের কথা শুনে তিনি আবেগে আ'প্লু'ত হয়ে পড়েন এবং মরিয়ম বেগমের হাতে তুলে দেন ৭ দিনের বাজার খরচ বাবদ আর্থিক সহায়তা।
ওসির দেয়া আর্থিক সহায়তার প্রতিক্রি'য়া সম্পর্কে জানতে চাইলে মরিয়ম বেগম বলেন, স্যারে মোরো বাজার করতে টাহা দিছে। কয়দিন কাম না কইররা খাইতে পারমু।
গৌরনদী থানার ওসি আফজাল হোসেন জানান, লকডাউন কার্য'করে তার থানা এলাকায় নিয়মিত কাজের ত'দার'কিতে বের হন তিনি। এসময় বার্থী গ্রামের প্রধান সড়কের পাশে মরিয়ম নামে ওই বৃদ্ধাকে ইট ভা'ঙ্গতে দেখেন। কারো মা, কারো দাদির বয়সী ওই অস'হায় মরিয়ম বেগমের দুরব'স্থা দেখে সত্যি ক'ষ্ট পেয়েছি। তাই তার সী'মাব'দ্ধতার মধ্যে থেকেই যতটুকু সাহায্য করা সম্ভব তাই বেতনের টাকা থেকে করেছি। মরিয়ম বেগমের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিনি সমাজের বিত্তবানসহ সমাজকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।