বরিশালের বানারীপাড়ায় সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মাথায় পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এক স্কুল ছাত্রী। ওই ছাত্রীর মানসিক মনোবল নিয়ে এরইমধ্যে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন স্থানীয়রা।
তবে স্কুল শিক্ষার্থীর সন্তান প্রসবের ঘটনায় বাল্য বিবাহের বিষয়টি সামনে বেড়িয়ে আসায় কিছুটা বিব্রত অভিভাবকরা।
চাখার ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মো. ফারুক হোসেন স্বজনদের বরাত দিয়ে জানান, প্রসূতি দোলা আক্তারেরে আগেই বিয়ে হয়েছিল। তার স্বামী ঢাকায় চাকরি করেন। সে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। রোববারের আগের পরীক্ষাগুলো ঠিকভাবেই দিয়েছেন।
তিনি জানান, রোববারের পরীক্ষা শুরুর কয়েকঘণ্টা আগে, সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ৭টার দিকে প্রসব বেদনা উঠলে চাখার ১০ শয্যা হাসপাতালের এক সেবিকার সঙ্গে যোগাযোগ করেন দোলার স্বজনরা। এরপর তার সহযোগিতায় ফুটফুটে এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেয় দোলা। তিনি আরও জানান, কিছুক্ষণ পর দোলা শারীরিকভাবে সুস্থ বোধ করলে সে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে চায়। পরে পরীক্ষা পরিচালনা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দোলা যথাসময়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।
ফারুক হোসেন জানান, বর্তমানে ছেলে সন্তান ও তার মা দুজনেই সুস্থ রয়েছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে গোটা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
চাখার ফজলুল হক ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক ও এসএসসি পরীক্ষার সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের সচিব মো. জিয়াউল হাসান জানান, চাখার হাসপাতালের একজন নার্স ও দোলার স্বজনরা পরীক্ষা শুরুর কিছু সময় আগে বিষয়টি আমাদের অবগত করে।
তারা যখন আমাদের বিষয়টি জানান তার অল্প কিছু সময় আগে নাকি ওই শিক্ষার্থী ছেলে সন্তান প্রসব করেছে। এমন কথা শুনে তার শারীরিক কথা বিবেচনা করে প্রথমে আমরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করানোর জন্য অভিভাবকদের বলি। কারণ হলে বসে যদি তার কোনো ধরনের কোনো শারীরিক ঝামেলা দেখা দেয় সেটি খুবই বিপদজনক হতে পারে।
তিনি বলেন, তার মানসিক মনোবল দেখে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলেই অবাক হয়েছি। পরে খোজ নিয়ে যতটুকু জেনেছি পরীক্ষার্থীর পিতার পরিবার তেমনভাবে স্বচ্ছল নয়। ক্লাস নাইনে থাকতে ওই পরীক্ষার্থীর বিয়ে হয় বলে জানান শিক্ষক জিয়াউল হাসান।