মঙ্গলবার, ০৯ আগস্ট, ২০২২, ১১:৩৩:৪৪

রাস্তায় পাওয়া এক লাখ ৯০ হাজার টাকা হারানো ব্যক্তিকে ফিরিয়ে দিলেন দিনমজুর

রাস্তায় পাওয়া এক লাখ ৯০ হাজার টাকা হারানো ব্যক্তিকে ফিরিয়ে দিলেন দিনমজুর

রাস্তায় পাওয়া এক লাখ ৯০ হাজার টাকা হারানো ব্যক্তিকে ফিরিয়ে দিয়েছেন এক দিনমজুর। তবে নিজের পরিচয় গোপন রেখেছেন ওই ব্যক্তি। মঙ্গলবার (০৯ আগস্ট) দুপুরে স্থানীয় এক কাউন্সিলরের মাধ্যমে এই টাকা প্রকৃত মালিকের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

ওই টাকার প্রকৃত মালিক বরিশাল নগরীর ভাটিখানার বাসিন্দা বিসিক শিল্প নগরীর ব্যবসায়ী শংকর কুমার সাহা। হারানো টাকা ফেরত পেয়ে ওই দিনমজুরকে পুরস্কৃত করতে চাচ্ছেন এই ব্যবসায়ী।

শংকর কুমার সাহা বলেন, ‘শনিবার দুপুরে ব্যাগভর্তি টাকা নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বিসিক শিল্প নগরীতে যাচ্ছিলাম। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার পর দেখতে পাই মোটরসাইকেলের হ্যান্ডেলে ঝুলানো টাকার ব্যাগ নেই। 

সঙ্গে সঙ্গে যে পথ ধরে এসেছি সে পথে পথে খোঁজ করি। এমনকিও পথে যেসব দোকানে সিসি ক্যামেরা ছিল তাও দেখেছি। কিন্তু টাকার হদিস পাইনি। পরে নগরীতে মাইকিং করাই। সবশেষে টাকার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম।’ 

তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুরে আমার কাছে ফোন করেন নগরীর ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মর্তুজা আবেদীন। তিনি টাকা হারানোর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন। 

সঠিক তথ্য দেওয়ায় বিকাল ৫টায় তার বাসভবনে যেতে বলেন। বাসভবনে যাওয়ার পর টাকার ব্যাগটি ধরিয়ে দেন কাউন্সিলর। কিন্তু যিনি টাকার ব্যাগটি পেয়েছেন তাকে দেখার ইচ্ছা ছিল আমার। তবে ওই ব্যক্তির দেখা পেলাম না। এমনকি কাউন্সিলরও তার পরিচয় দেননি।’

এ ব্যাপারে কাউন্সিলর মর্তুজা আবেদীন বলেন, ‘ওই দিনমজুর টাকা নিয়ে আমার কাছে এসে হারানো ব্যক্তিকে দেওয়ার অনুরোধ করেন। তখন পরীক্ষা করার জন্য বলি, ওই টাকা তুই নিয়ে যা, দেওয়া লাগবে না। 

তখন উত্তরে বলে, একদিন মরতে হবে না, হিসাব দিতে হবে না। এরপর বলি তাহলে আমি রেখে দিই, তখন বলে, আপনি বিশ্বস্ত বলেই তো আপনার কাছে এলাম। আপনার কাছে টাকার ব্যাগ রেখে গেলাম। যার টাকা তাকে ফিরিয়ে দিয়েন। তাকে আমার কথা বলার দরকার নেই।’ 

কাউন্সিলর বলেন, ‘টাকার ব্যাগ রেখে যাওয়ার সময় দিনমজুরকে বললাম, কষ্ট করে দিন অতিবাহিত করিস, যদি ওই ব্যক্তি কিছু দিতে চায় তাহলে? উত্তরে বলে, তা আমার লাগবে না। আপনার কাছে অনুরোধ, আমার পরিচয় গোপন রাখবেন। এজন্য ওই ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখেছি।’

মর্তুজা আবেদীন আরও বলেন, ‘এখনও ভালো মানুষ আছে। ওই দিনমজুর কাজ পেলে পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার জোটে। কাজ না পেলে জোটে না। এ অবস্থার মধ্যে এতগুলো টাকা রাস্তায় পেয়েও ফিরিয়ে দিয়েছে। এমন মানুষ খুব কমই আছে।’

কাউন্সিলর আরও বলেন, ‘টাকাটা যেদিন হারিয়েছিল সেদিনই পেয়েছিল ওই দিনমজুর। তবে হারানো ব্যক্তিকে খুঁজে না পেয়ে আমার কাছে রেখে যায়। আজ মাইকিং শুনে ওই ব্যবসায়ীকে বাসায় ডেকে টাকা ফিরিয়ে দিয়েছি।’

ব্যবসায়ী শংকর কুমার সাহা বলেন, ‘এখনও পৃথিবীতে সৎ মানুষ আছে। আমি ওই দিনমজুরের সততায় মুগ্ধ। তাকে পুরস্কৃত করতে চাই। অন্তত একবার ওই ভালো মানুষটিকে দেখতে চাইলাম। কিন্তু কাউন্সিলর কোনোভাবেই তার পরিচয় দিলেন না।’-বাংলা ট্রিবিউন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে