ভোলা : প্রায় ২ বছর ধরে শিয়াল-কুকুরের দখলে স্কুলটি। বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হচ্ছে মুরগির খামারে। সরকারি অর্থয়ানে নির্মিত স্কুলটির ছাদ ধসে পড়ায় এমন অবস্থা হয়েছে। এ কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম।
ভোলার লালমোহন উপজেলার দক্ষিণ পূর্ব চরউমেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, শিক্ষার্থীরা প্রায় ২ বছর ধরে ক্লাস করছে মুরগির খামারে। পরিত্যক্ত ক্লাস সংস্কার না করায় স্কুল ভবনটি কুকুর-শিয়ালের আস্তানায় পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, ১৮৮৯ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করে এলাকাবাসী। পরে সেখানে ১৯৯৩-৯৪ অর্থ বছরে একতলা ভবন নির্মাণ করে এলজিইডি।
প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, নিন্মমানের ইট, বালু, সিমেন্ট দিয়ে ভবনটি নির্মাণ করায় কিছু দিন না যেতেই ভবনের বিভিন্ন অংশ খসে পড়তে থাকে। একপর্যায়ে বারান্দার ছাদ এবং পিলারগুলো ধসে পড়ে। দরজা-জানালা এবং ফার্নিচারও নেই।
তিনি বলেন, চারজন শিক্ষক ও একজন দপ্তরী দিয়ে কোনোরকমে স্কুলটি চালাচ্ছি। আজ থেকে দেড় বছর আগে ম্যানেজিং কমিটি ছিল, কিন্তু আজ তাও নামে মাত্র।
গত দেড় বছর আগে ম্যানেজিং কমিটিতে ছিলেন বিএনপি নেতা মেজর হাফিজের চাচাতো ভাই। এরপর দক্ষিণ পূর্ব চরউমেদ ইউপির চেয়ারম্যানের ভাই রফিকুল ইসলাম ম্যানেজিং কমিটিতে আসার পর আর কমিটি হয়নি।
প্রধান শিক্ষক বলেন, আমাদের বেতন থেকে প্রতি মাসে ২০০০ টাকা করে দুটি মুরগির খামারের ঘর ভাড়া দিয়ে স্কুল চালাচ্ছি।
এ ব্যাপারে একাধিকবার জেলা শিক্ষা অফিস থেকে শুরু করে উপজেলা শিক্ষা অফিসে ধর্না দিয়েও কোনো কাজ হয়নি বলে জানান শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাইমারি শিক্ষা অফিসার মো. হোসেন বলেন, ওই স্থানে নতুন ভবন নির্মাণের সব ব্যবস্থা হয়েছে। এ মাসে কাজ শুরুর কথা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, আশপাশে কোনো স্কুল থাকলে আমাদের ছেলেমেয়েদের মুরগির খামারে পড়াতাম না। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসকে জানানো সত্বেও গত ২ বছরে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
প্রধান শিক্ষক বলেন, আশপাশে কোনো ঘর না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে মাসিক ২ হাজার টাকায় দুটি মুরগির খামারের ঘর ভাড়া নিয়ে স্কুল চালাচ্ছি।
তিনি বলেন, স্কুলে বিভিন্ন শ্রেণিতে প্রায় আড়াইশ' শিক্ষার্থী রয়েছে। যার মধ্যে ৯০ জনের মতো উপবৃওি পাচ্ছে। বাকিদের জন্য চেষ্টা করেও লাভ হয়নি।
এ ব্যাপারে ইউপি মেম্বার শাহাবুদ্দিন হাওলাদার বলেন, পরিত্যাক্ত ভবনটি এখন শিয়াল-কুকুরের আস্তানা। রাত গভীর হলে শেয়ালের ডাক শোনা যায়।
শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ভবনটি নির্মাণ করা খুবই জরুরি।
১২ আগস্ট,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম