সাদির হোসেন রাহিম, (ভোলা) থেকে: ১৯৪৭ সালে দেশ বি-ভাগের পরপরই আনসার বাহিনী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ভিডিপি গঠিত হয়ে আজ বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বাহিনী বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী। মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে আজ অবধি দেশের সার্বিক কল্যাণে এই বাহিনীর রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। ‘শান্তি, শৃঙ্খলা, উন্নয়ন, নিরাপত্তায় সর্বত্র আমরা’ মূলমন্ত্রকে ধারণ করে এ বাহিনী আজ সমগ্র বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর আর্থ সামাজিক উন্নয়নে সক্রিয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ভোলা জেলা কমান্ড্যান্ট জনাব জানে আলম সুফিয়ানের সফল নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে এগিয়ে যাচ্ছে ভোলার আনসার ভিডিপি। বিগত দিনে দেশে জঙ্গি ভয়াবহতার সময় জঙ্গি দমনে ভোলার আনসার ও ভিডিপি সক্রিয় ভুমিকা পালন করে। জেলা কমান্ড্যান্টের নেতৃত্বে ভোলাতে প্রথমবারের মত জনসাধারণের মাঝে লিফলেট বিতরন করে জঙ্গি দমনে মানুষকে সচেতনতা মূলক পরামর্শ দিয়ে ভোলাকে জঙ্গি হামলা থেকে বাচাঁতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন। দূর্গা পুজা চলাকালিন সময়ে সব রকম নাশকতা মূলক কার্যকলাপ ঠেকাতে জেলা কমান্ড্যান্টের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল পূজা মন্ডবের গুরুত্ত্বপূর্ণ পয়েন্ট পরিদর্শণ করেন। এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা যাতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গোৎসব উদযাপন করতে পারে সে লক্ষ্যে আনসার ও ভিডিপি সদস্যদেরকে তৎপর রেখে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে বিশেষ ভুমিকা পালন করে জনগনের মাঝে আনসার ও ভিডিপি বাহিনীর সুনাম অর্জন বয়ে আনেন।
জনাব জানে আলম সুফিয়ান ১ই ডিসেম্বর ২০১৩ইং সালে ভোলাতে জেলা কমান্ড্যান্ট পদে দ্বায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ভোলার আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা আশার আলো দেখতে পায়। জেলার আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের মধ্যে ফিরে আসে সক্রিয় শৃঙ্খলাবোধ ও কঠোর নিয়মানুবর্তীতা।
তিনি দ্বায়িত্ব নেওয়ার পর পরই ৩ বছর যাবত অকেজু অবস্থায় পরে থাকা অফিস ভবনটি মেরামত সহ গেট তৈরি ও ভবনের সামনে নিজ উদ্যোগে ব্যাক্তিগত ভাবে রাস্তা তৈরি করে ভবনটিতে অফিসিয়াল সকল কার্যক্রম শুরু করেন। আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ে নিয়মিত হাজিরা ডাকার ব্যাবস্থা করেন। অফিস চলাকালিন সময়ে সকলকে তাদের সরকারী পোষাক (ইউনিফর্ম) পড়ে ডিউটিতে আসতে নির্দেশ দেন। ভোলাতে সর্ব প্রথম তারই উদ্যোগে বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে অস্ত্র সহ প্যারেড করানো হয়। সকল কর্মকর্তা, উপজেলা প্রশিক্ষকগন অফিস স্টাফদের সাথে নিজস্ব ইমেইল একাউন্ট ও ভাইবারের মাধ্যমে তাদের কর্মকান্ডের ছবিসহ সকল তথ্য আদান প্রদান করে থাকেন। ভোলার আনসার ও ভিডিপি ভবনে ভোলাতে এই প্রথম জেলা কমান্ড্যান্টের প্রচেষ্টায় আবাসিক প্রশিক্ষণের ব্যাবস্থা করা হয়। কার্যালয়ের বাউন্ডারির ভিতরে গাজাঁখোর , মাদকসেবনকারী বহিরাগতদের সময় অসময়ে আড্ডা দেওয়া নিষিদ্ধ করা হয়। বিভিন্ন জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে জেলা কমান্ড্যান্টের উদ্যোগে ভোলার আনসার ও ভিডিপির পক্ষ থেকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের দ্বারা দরিদ্রদের কে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। শীতকালীন সময়ে নিজের বেতনের টাকা দিয়ে গরিব, অসহায় মানুষের পাশে দাড়ান। তাদের মাঝে নিজের বেতনের টাকায় শীত বস্ত্র বিতরন করেন।
শুধু তাই নয়, গত ১৫ই অক্টোবর থেকে ৫ই নভেম্বর পর্যন্ত ভোলার আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ে চলমান ভিডিপির ২১ দিন ব্যাপি অস্ত্র সহ মৌলিক প্রশিক্ষণ কোর্স চলাকালিন সময়ে জেলা কমান্ড্যান্ট জনাব জানে আলম সুফিয়ান নিয়মিত উপস্থিত থেকে নিজের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণার্থীদেরকে প্রশিক্ষণ প্রদানে সর্বাত্বক সহযোগীতা করে থাকেন। প্রশিক্ষণার্থীরা যাতে সঠিক প্রশিক্ষণ গ্রহন করে দেশ ও জাতির শান্তি, শৃঙ্খলা, উন্নয়ন ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে সে বিষয়ে তাদেরকে সচেতনতা মূলক পরামর্শ প্রদান করেন। প্রশিক্ষণার্থীদের বিশ্রামের জন্য থাকা, উন্নত খাবার পরিবেশন ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের দ্বারা পরামর্শ প্রদান করে তাদের শারিরীক ও মানসিক ভাবে সুস্থ্য রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।
এছাড়া থানা পর্যায়ে গ্রাম ভিত্তিক ১০ দিন ব্যাপি ভিডিপি মৌলিক প্রশিক্ষণ কোর্স চলাকালিন সময়ে যাতে প্রশিক্ষণার্থীরা সঠিক প্রশিক্ষণ নিতে পারে সে বিষয়ে নজর রেখে জেলা কমান্ড্যান্ট দূর্যোগপূর্ন এলাকাতেও দূর্গম পথ পাড়ি দিয়ে পায়ে হেটে গ্রাম পর্যায়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গুলো পরিদর্শন করে ও প্রশিক্ষণার্থীদেরকে সঠিক প্রশিক্ষণ প্রদানে সর্বাঙ্গিন সহযোগীতা করেন।
সর্ব মহলের বিশ্বাস ভোলার জেলা কমান্ড্যান্ট জনাব জানে আলম সুফিয়ান তার সততা, দক্ষতা ও যোগ্যতা দিয়ে ভোলার আনসার ও ভিডিপি কে সফল ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করে সারা দেশে ভোলার আনসার ও ভিডিপির সূনাম অর্জন বয়ে আনবে।
২৬ নভেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস