চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে : আমার কাছে আবু যখন ছিল তখন সে খারাপ ছিল না। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের প্ররোচনায় আবু খারাপ পথে গেছে। সে মরে গেলেও আমরা তাকে নিতে যাবো না বলে মন্তব্য করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের জঙ্গি আস্তানায় জঙ্গি আবু আলীর মা ফুলশানা বেগম।
ফুলশানা বেগম বলেন, আমার কাছে আবু যখন ছিল তখন সে খারাপ ছিল না। শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার ছেলেকে খারাপ পথে নিয়ে গেছে। তাইতো পুলিশ এসেছে তাদের মারতে। আমার ভিটামাটি ছাড়ার পরই আবুর এই দশা হচ্ছে। সে মরে গেলেও আমরা তাকে নিতে যাবো না।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের শিবনগর এলাকার জঙ্গি আস্তানায় আবু আলী নামে যে জঙ্গি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তার মা ফুলশানা বেগম এই তথ্য জানান। শিবনগরের ওই আস্তানা থেকে আধা কিলোমিটার দূরে ত্রিমোহনীতে আবুর পৈত্রিক বাড়িতে তার মা ফুলশানা বেগম আক্ষেপ করে নিজের ছেলে সম্পর্কে এ মন্তব্য করেন।
পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা জানান, বুধবার শিবনগরে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের খবর জানার পর থেকে বিছানা ছেড়ে উঠেননি ফুলশানা বেগম। না খেয়ে বিছানাতেই শুয়ে রয়েছেন। আবু তার প্রথম সন্তান। শিবনগরের ওই আস্তানায় আবুর সঙ্গে তার স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে বলেও জানান পরিবারের সদস্যরা। ফুলশানা অভিযোগ করেন, ‘শ্বশুরবাড়ির লোকজনের প্ররোচনায় আবু খারাপ পথে গেছে।’
স্বজনদের দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, আবুর দুই মেয়ে নুরী (৭) ও সাজিদা (৬)। পুলিশ ঘিরে রাখার আগের দিন সন্ধ্যায় দাদা-দাদির বাড়ি থেকে দুই মেয়েকে ওই ভাড়া বাড়িতে নিয়ে যায় আবু।
ফুলশানা বেগমের পাশে বসে থাকা আবুর চাচি চামেলি বেগম বলেন, ‘আবু ও তার স্ত্রী জঙ্গি হয়েছে। খারাপ পথে গেছে, তাদের শাস্তি হোক। কিন্তু তাদের মেয়ে নুরী ও সাজিদা তো আর জঙ্গি না। তাহলে কেন তারাও মা-বাবার পাপের ভাগীদার হবে? নিষ্পাপ শিশু দুটিতো আর দোষ করেনি। আপনারা একটু খোঁজ নিয়ে দেন না - শিশু দুটি বেঁচে আছে না মরে গেছে?’
এদিকে জঙ্গি আস্তানায় সোয়াট টিমের অপারেশন ঈগল হান্টে চার জঙ্গি নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত এক নারী ও এক শিশুকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে পুলিশের রাজশাহী বিভাগের ডিআইজি খুরশীদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২৭ এপ্রিল ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসএস