চাঁপাইনবাবঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার নিজামপুর ইউনিয়নের বাইপুর গ্রামের মৃত জাহাঙ্গীর আলী খাঁ’র স্ত্রী জহিরনের তিন প্রজন্মই বিধবা। সরকারি কোনো সাহায্য সহযোগিতা না পাওয়ায় এ বিধবাদের সংসার চলে বৃদ্ধা জহিরনের ভিক্ষায়।
প্রায় ১৪ বছর আগে বিধবা জহিরনের মেয়ে পারভিনের বিয়ে হয় নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার রুদ্রপুর সালকোনা গ্রামের রফিকুল ইসলামের সঙ্গে। পারভিনের দুই মেয়ে রিক্তা ও জান্নাতুন। ছোট মেয়ে জান্নাতুনের বয়স যখন ২ বছর তখন মারা যায় পারভীনের স্বামী রফিকুল ইসলাম। স্বামীর মৃত্যুর পর ২ মেয়েকে নিয়ে ফিরে আসে মায়ের বাড়িতে। এদিকে পারভিনের বড় মেয়ে রিক্তার পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিয়ে হয় একই এলাকার এক বৃদ্ধের সঙ্গে। কিন্তু কিশোরী রিক্তার স্বামীর মৃত্যু হলে বিধবা হয়ে সেও ফিরে আসে নানি ও মায়ের কাছে।
জহিরনের স্বামী জাহাঙ্গীর আলী খাঁ’র প্রথম পক্ষের ছেলে মেয়েরা বাবার মৃত্যুর পূর্বেই সমস্ত বিষয়-সম্পত্তি লিখে নেয়। ফলে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হয় দ্বিতীয় স্ত্রী জহিরন।
বাইপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় ছোট্ট পুকুরপাড়ে দেড় শতাংশ খাস জমিতে মাটির আঁচড়ার ছোট ঘর। বর্ষাকালে পুকুরের পানি উপচে উঠান ডুবে যায়। গত এপ্রিল মাসে বর্ষায় পুকুরের পানি ও বৃষ্টির পানিতে রান্না ঘরটি ভেঙে গেছে। বাঁশের কঞ্চির বেড়াতে মাটির প্রলেপ দেয়া ছোট ওই ঘরে ঠাসাঠাসি করে জহিরন (৭৮), তার বিধবা মেয়ে পারভিন বেগম (৩৯), পারভিনের বিধবা মেয়ে রিক্তা খাতুন (১৭) ও ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতুন খাতুন(৯) বাস করে।
জহিরনদের ছোট ঘরটি যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। বর্ষায় রান্নাঘর ভেঙে যাওয়ায় ওই বসত ঘরের এক কোণে বৃষ্টি ও রোদের সময় ছাতা মাথায় দিয়ে রান্না করে খেতে হয় তাদের। সবাই নির্ভরশীল বৃদ্ধা জহিরনের ভিক্ষায়। তবে তাদের ভাগ্যে জোটেনি সরকারি কোনো সাহায্য।
বৃদ্ধা জহিরন ও তার মেয়ে পারভিন জানায়, এ বছর ওই ইউনিয়নের ওয়ার্ড মেম্বার পারভিনকে ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পে মাটি কাটার কাজ দিয়েছে। কিন্তু বৃদ্ধা মা জহিরনের ভিক্ষা থেকে ও পারভিনের আয় দিয়ে ৪ সদস্যের সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।
জহিরনের পুনর্বাসনের বিষয়ে নিজামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন বলে আশ্বাস দেন।
নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানা বলেন, আবেদন করলে ওই পরিবারকে সহযোগিতা করার ব্যবস্থা করা হবে।-জাগো নিউজ