নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের প্রেমতলায় জঙ্গি আস্তানায় চালানো অপারেশন অ্যাসল্ট সিক্সটিনে চার জঙ্গি নিহত হয়েছে। পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, নিহত জঙ্গিদের মধ্যে এক নারী ও তিনজন পুরুষ। তার মধ্যে দুইজনের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। তারা সবাই নব্য জেএমবির সদস্য। ওই বাড়িতে জিম্মি থাকা সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) প্রেমতলার জঙ্গি আস্তানার কাছেই এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিআইজি এসব তথ্য জানান। তিনি অপারেশন অ্যাসল্ট সিক্সটিনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। তবে ‘ছায়ানীড়’ নামের এই বাড়িতে যে অংশে জঙ্গিরা থাকতো সেখানে প্রচুর গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক রয়েছে এবং সেখানে ডাম্পিং অপারেশন চলবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
অভিযান চালানোর সময় সোয়াত টিমের দুইজন, পুলিশের একজন এবং ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্য আহত হয়েছেন।
অপারেশন অ্যাসল্ট সিক্সটিনের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার ভোর সোয়া ৬টা থেকে সোয়া এক ঘণ্টার অভিযান চালানো হয় বলে জানান ডিআইজি শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সকালে সোয়াত টিমের সদস্যরা পাশের ভবন থেকে ছায়ানীড়ের ছাদে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় জঙ্গিরা দোতলায় উঠে ‘আল্লাহু আকবর’ আওয়াজ তুলে হামলা চালায়। তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়। আরেকজন আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে আরও দুইজন নিহত হয়। দুইজনের মরদেহ পুরোপুরি ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে, ফলে তাদের চেনাই যাচ্ছে না।’
বুধবার সীতাকুণ্ড পৌরসভার আমিরাবাদ এলাকায় নামারবাজারে ‘সাধনকুটির’ নামের একটি বাড়িতে জঙ্গিদের আরেকটি আস্তানা থেকে জসিম ও আরজিনা নামের দুই জঙ্গিকে আটক করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে কোনও তথ্য পাওয়া গেছে কিনা, প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি বলেন, ‘ওরা খুবই হার্ডলাইনের (কট্টরপন্থী)। এখন পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে কোনও তথ্য বের করা যায়নি। তবে পুলিশ তথ্য বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
চট্টগ্রামে মীরসরাই ও সীতাকুণ্ডে পরপর জঙ্গিদের কয়েকটি আস্তানা শণাক্তের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ডিআইজি বলেন, ‘সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ বাধগ্রস্ত করার জন্যই জঙ্গিরা তৎপর হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি।’
উল্লেখ্য ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সোয়াত টিমের নেতৃত্বে প্রেমতলার ওই বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে তাদের সঙ্গে অংশ নেন চট্টগ্রামের সোয়াত, র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা। অভিযান শুরুর পর সোয়াত সদস্যদের লক্ষ্য করে আত্মঘাতী হামলা চালায় জঙ্গিরা। জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলায় সোয়াতের দুই সদস্য গুরুতর আহত হন। তাদেরকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে বুধবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যার পর সীতাকুণ্ড পৌরসভার আমিরাবাদ এলাকায় নামারবাজারে ‘সাধনকুটির’ নামের একটি বাড়ি থেকে জসিম ও আরজিনা নামের দুই জঙ্গিকে আটক করে পুলিশ। ওই নারীর গায়ে আত্মঘাতী হামলার ভেস্ট ছিল। সাধনকুটির থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।-বাংলা ট্রিবিউন
১৬ মার্চ ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস