মহিউদ্দীন জুয়েল, চট্টগ্রাম থেকে : চট্টগ্রামে বর্ধিত হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষ নেতার মুখোমুখি অবস্থানে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বন্দর নগরীর রাজনীতি। ট্যাক্স আদায়ের সিদ্ধান্তের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নেয়া এই দুই নেতা হলেন বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ও সাবেক মেয়র, চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরী।
সর্বশেষ গতকাল শনিবার সকালে নিজ বাসায় পারিবারিক অনুষ্ঠানে ডেকে সাংবাদিকদের আগামী ১০ই এপ্রিল লালদীঘি ময়দানে হাজির হওয়ার কথা ঘোষণা দিয়েছেন মহিউদ্দিন। বলেছেন, আমি নগরের বর্ধিত হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের সিদ্ধান্ত বন্ধ করার জন্য যা যা করার করবো। প্রয়োজনে এই নিয়ে সমাবেশ করবো। সাধারণ মানুষের কষ্ট হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হতে দেবো না।
তবে স্থাপনার ‘ভাড়ার ভিত্তিতে’ গৃহকর আদায়ে অনড় জানিয়ে আ জ ম নাছিরও এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে একজন নেতা সবাইকে উস্কে দিচ্ছেন। প্রভাবশালী এই দুই নেতার পাল্টাপাল্টি এমন বক্তব্যে সরগরম এখন চট্টগ্রামের রাজনীতি। নগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এই দুই নেতা দুটি ধারার নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।
ট্যাক্স নিয়ে নতুন করে বিরোধের সূত্রপাত হয় গত ১৯শে মার্চ। সেদিন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালামের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নগরে হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ালে সংসদ নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই মেয়রকে অনুরোধ, বর্ধিত হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের সিদ্ধান্ত বন্ধ করুন।
পরদিন সোমবার সিটি করপোরেশনের ২০তম সাধারণ সভায় এর পাল্টা জবাব দেন আ জ ম নাছির উদ্দিন। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় হোল্ডিং ট্যাক্স ধার্য করা নিয়ে একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি ও বিশেষ মহল জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন। ওই ব্যক্তি ও মহল সরকারের আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নানামুখী অপপ্রচারে লিপ্ত।
তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় নাগরিকদের ওপর কর ধার্য করার কোনো এখতিয়ার বা ক্ষমতা মেয়রের নেই। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কর ধার্য করে। কর আদায় করে সিটি করপোরেশন।
নগর আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, বর্ধিত হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে আগামী ১০ই এপ্রিল লালদীঘিতে সমাবেশ ডেকেছেন মহিউদ্দিন। সেখানে তার অনুসারীদের হাজির থাকার কথাও বলেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমি নিজেও মেয়র ছিলাম। গৃহকর বাড়ানোর পাঁয়তারা কিছুতেই সফল হতে দেবো না। সমাবেশ ডেকেছি। সেখানে যা কর্মসূচি ঘোষণা করার তা করবো।
অন্যদিকে মেয়র নাছির বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করে যাবো। নগরবাসীর ভালো-মন্দ দেখার দায়িত্ব আমার। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কর ধার্য করে। কর আদায় করে সিটি করপোরেশন। এখানে আমাকে উদ্দেশ্য করে কেন কথা বলা হচ্ছে বুঝতে পারলাম না। এমজমিন
০৯ এপ্রিল ২০১৭/এমটি নিউজ২৪/এসবি