চট্টগ্রাম থেকে : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়। এরপর একে অপরের সাথে সরাসরি দেখা। দু’জনের মধ্যে গড়ে উঠে সম্পর্ক। তারপর পরকীয়া এবং শেষে বিয়ে। দীর্ঘ সময় বিষয়টি গোপন রেখে পরে প্রথম স্বামী ও একটি মেয়ে রেখে ২য় স্বামীর সাথে উধাও গৃহবধু।
এ ঘটনায় চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম ৩য় আদালতে নিজের স্ত্রীও প্রেমিকের নামে মামলা করেছেন মিরসরাই উপজেলার ৭ নম্বর কাটাছড়া ইউনিয়নের বামনসুন্দর এলাকার মফিজুর রহমানের ছেলে হাসান আরিফ।
মামলার বিবরণে জানা যায়, প্রথম বিয়ে বহাল থাকা অবস্থায় ফেসবুকে পরকীয়া প্রেমিককে বিয়ে করার অভিযোগে গৃহবধূ ফাহিমা আক্তারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন প্রথম স্বামী। বিয়ে বহাল থাকা অবস্থায় স্ত্রীর ২য় বিয়ের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমতির জন্য গত ৪ এপ্রিল স্বামী হাসান আরিফ আদালতে দরখাস্ত দাখিল করেন। এরপর আদালতে জবানবন্দী দেন প্রথম স্বামী। অভিযোগটি আমলে নিয়ে স্ত্রীর বিরুদ্ধে সমন জারি করেন মহানগর হাকিম আদালত-৩য় চট্টগ্রাম এর ম্যাজিষ্ট্রেট। আগামী ১১ জুলাইয়ের মধ্যে অভিযুক্ত স্ত্রীকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন ম্যাজিস্ট্রেট।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালের ১৯ অক্টোবর ঝালকাঠি জেলার রাজারপুর উপজেলার সাউদপুর গ্রামের মৃত রফিকুল ইসলামের মেয়ে ফাহিমা আক্তারের সাথে ১ লাখ টাকার কাবিননামায় মিরসরাই উপজেলার কাটাছড়া ইউনিয়নের বামনসুন্দর এলাকার মফিজুর রহমানের ছেলে হাসান আরিফের বিয়ে হয়। এরপর তাদের সংসারে এক মেয়ে জন্ম নেয়। মেয়ের বর্তমান বয়স ৭ বছর। তার সাথে বিয়ে বলবৎ থাকা অবস্থায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে পরকীয়ায় পড়েন ফাহিমা। সে ২০১৫ সালের ১৪ নভেম্বর ঢাকার আলগিজার নওয়াবগঞ্জের বাসিন্দা নুরুল ইসলামে পুত্র মামুনের সাথে বিয়ে হয়।
দ্বিতীয় বিয়ে হওয়ার পরও ফাহিমা পূর্বের স্বামীর সাথে চলতি বছরের ২৫ মার্চ পর্যন্ত সংসার করে। প্রথম স্বামী আরিফ তখনও তার ২য় বিয়ের বিষয়টি জানতেন না। গত ২৫ মার্চ দুপুর ২টার দিকে একমাত্র মেয়েকে বাসায় রেখে স্বর্ণালংকার ও নগদ ৬৫ হাজার টাকা নিয়ে ফাহিমা পালিয়ে যায়। এর পরপরই প্রথম স্বামী আরিফ বাদী হয়ে চাঁন্দগাও থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে (নম্বর-১২৬৩)। ২৬ মার্চ ফাহিমা আরিফের মোবাইলে ফোন করে তার পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি ও বিদেশ চলে যাবে বলে অবহিত করেন। এ বিষয়ে প্রথম স্বামী কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি করলে প্রাণনাশের হুমকি ও নারী নির্যাতন মামলা করার হুমকি দেয়।
মামলার বাদী হাসান আরিফ বলেন, আমি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করি। আমাদের এক মেয়েকে নিয়ে অনেক সুখের সংসার ছিল। আমি মাঝে মধ্যে তার আচারণগত কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি। তবে দ্বিতীয় বিয়ের মতো এমন কাজ করবে আমি কখনো ভাবিনি। ফাহিমা আমার সুখের সংসার তছনছ করে দিয়েছে। সে আমিও আমার মেয়ের ওপর জুলুম করেছে। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
বাদীর আইনজীবী এডভোকেট মুহাম্মদ বরকত উল্ল্যাহ খাঁন জানান, আসামি প্রথম স্বামীর সাথে বিয়ে বহাল থাকাবস্থায় দ্বিতীয় বিয়ে করায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের দ্বিতীয় বিয়ের কাবিননামা আদালতে দাখিল করা হয়েছে। আদালত বাদীর জবানবন্দী গ্রহণ করে মামলাটি আমলে নিয়েছেন। আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪৯৪ ধারায় সমন জারি করেছেন।
৬ মে, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএস