চট্টগ্রাম থেকে : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে স্থানীয় এক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে তুলনা করে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও ওই প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগে করা এক মামলায় চট্টগ্রামের ৬ উপজেলার ১৩ শিক্ষককে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৩ আগস্ট) বাঁশখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন এ আদেশ দেন। বাঁশখালী থানার ওসি আলমগীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আসামিরা হলেন, প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী শিক্ষক দুকুল বড়ুয়া, বাঁশখালী উপজেলার নাসেরা খাতুন, আরকে বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবু তাহের, রায়ছটা প্রেমাসিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ মিয়া, আনোয়ারা উপজেলার পাঠানিকোঠা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক, আনোয়ারা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাদল চন্দ্র দাশ, পটিয়া উপজেলার মোজাফ্ফরাবাদ এমজে উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইউসুফ, হাইদগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক শ্যামল কান্তি দে, সাতকানিয়া উপজেলার বাজালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অজিত চারণ, চন্দন পাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক এম ওয়ায়েদ উদ্দিন, বোয়ালখালী উপজেলার মনসুর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী, কদুরখিল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমির হোসেন, চন্দনাইশ উপজেলার কেশুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিজন ভট্টাচার্য ও বড়মা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ হোসেন।
পুলিশ জানায়, মামলা দায়েরের সময় এই শিক্ষকরা বাঁশখালীসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৬টি উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। বাঁশখালী থানার ওসি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষকরা বুধবার আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। বিচারক আবেদন খারিজ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই অনুষ্ঠিত নবম শ্রেণির অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষায় ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ বিষয়ের সৃজনশীল প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বাঁশখালী গণ্ডামারা ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান লিয়াকত আলীকে তুলনা করে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হয়। পরে ওই প্রশ্নপত্রে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৬টি উপজেলার ৯৭টি উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়।
পরে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হলে প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী বাঁশখালী বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক দুকুল বড়ুয়াকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলিশে সোপর্দ করেন। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ছয়টি উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকসহ প্রশ্ন প্রণয়নকারীকে আসামি করে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করে রাষ্ট্রপক্ষ।
মামলার পর ওই ১৩ শিক্ষক হাইকোর্ট থেকে তিন মাসের আগাম জামিন নেন। বুধবার আগাম জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ফের জামিন আবেদন করতে গেলে আদালত তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এমটিনিউজ/এসএস