চট্টগ্রাম থেকে : ‘ছেলের কবরের মাটি শপথ করে বলছি। এখান থেকে আমার মরদেহ নিতে হবে। কাফনের কাপড়ে নিতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত একজন আসামিও গ্রেপ্তার না হয় এখান থেকে আমি সরবো না। যদি এখান থেকে আমাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে আমি শহরের প্রেস ক্লাবের সামনে যাব। রাজপথে হাঁটবো।’
এভাবে অশ্রুসিক্ত নয়নে কথাগুলো বলছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মা জাহেদা আমিন চৌধুরী। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে দিয়াজ হত্যাকারীদের বিচার ও আসামিদের গ্রেপ্তার দাবিতে কাফনের কাপড়ে আমরণ অনশনকালে এসব কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী সকাল ১১টার দিকে হঠাৎ বিশ্ববিদ্যালয়েরর বঙ্গবন্ধু চত্বরে কাফনের কাপড় হাতে নিয়ে অবস্থান করেন। সেখানে তিনি একা দাঁড়িয়ে খুনিদের বিচার চেয়ে বিলাপ করেন। এসময় তিনি বলেন ‘আমাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলুক, না হয় আমার ছেলের আসামিদের গ্রেপ্তার করা হোক।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে জাহেদা আমিন চৌধুরী বলেন, ‘সব প্রমাণের পরও খুনিদের বিচার কেন হচ্ছে না? নিশ্চয় টাকার কাছে প্রশাসন হার মানছে।’ এভাবে একঘণ্টা অবস্থান করার পর দিয়াজের মা দুর্বল হয়ে পড়লে প্রতিবেশীরা এসে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে নিয়ে যান।
রে বেলা ১২টা থেকে পুনরায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘দিয়াজ হত্যার বিচার চাই’ শিরোনামে একটি ব্যানারসহ অবস্থান নিয়ে রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর আবদুল হামিদের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘ভিসিকে অপসারণ করুন। ভিসি অপসারণ না হলে আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার হবে না। ভিসির কারণে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।’
উল্লেখ্য, গত বছর ২০শে নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২নং গেট এলাকার একটি ভাড়া বাসায় দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর পরিবারের পক্ষ থেকে ২৪শে নভেম্বর আদালতে মামলা করে দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী। কিন্তু ঘটনার এক বছর পেরুলেও এখনো পর্যন্ত উন্মোচিত হয়নি হত্যার আসল রহস্য। গ্রেপ্তার হয়নি কোনো আসামি।
এমটিনিউজ/এসবি