শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮, ১২:৫৯:২৪

পুলিশের বাধা ঠেলেও তৎপর বিএনপি নেতাকর্মীরা

পুলিশের বাধা ঠেলেও তৎপর বিএনপি নেতাকর্মীরা

চট্টগ্রাম থেকে : চট্টগ্রামে বিএনপি’র প্রতিপক্ষ যেন পুলিশ। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার নামে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঠেই নামতে দিচ্ছে না। গত ৮ই ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রায়কে ঘিরে চট্টগ্রামে পুলিশের ভূমিকা কঠোর হয়ে ওঠে।

ওইদিন পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের দলীয় কার্যালয় নসিমন ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখে। মারধর খেতে হয়েছে শ’ শ’ নেতাকর্মীকে। আটক হয়েছেন ২১ নেতাকর্মী। যাদের মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনসহ ১৭ জন কারাগারে রয়েছেন এখন।

এর আগেও রাজনৈতিক গরম ইস্যুগুলোতে পুলিশ এ রকম কঠোর ভূমিকা পালন করেছে। তবুও থেমে থাকেনি বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পুলিশের বাধা ঠেলেও সক্রিয় রয়েছেন তারা। দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ছাড়াও প্রতিদিন সাংগঠনিক কাজে তৎপর দেখা যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে।

তবে সব তৎপরতা ওই দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনেই। পুলিশি বাঁধার কারণে এই ভবন থেকে বেরুতেই পারেন না নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীদের নজরে রাখতে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দুই শতাধিক পুরুষ ও নারী পুলিশ ঘিরে রাখেন নাসিমন ভবন। যাদের হাতে থাকে অত্যাধুনিক অস্ত্র। লোহার রড ও বেতের শক্ত লাঠি।

গরম ইস্যুগুলোতে গরম জল নিয়ে নামেন সাঁজোয়া যান। নিজেদের নিরাপত্তায় পরনে রাখেন লাইফ জ্যাকেট। মাথায় হেলমেট। আর বিএনপি নেতাদের হাতে থাকে হয় একটি ব্যানার, একটি মাইক। কর্মীদের হাতে থাকে কিছু প্লে-কার্ড। নিজেদের রক্ষায় নেই কোন জ্যাকেট বা হেলমেট।

গত ৮ ফেব্রুয়ারির প্রসঙ্গ তুলে ধরে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার বলেন, সাধারণ মানুষের জান-মাল রক্ষায় পুলিশ কঠোর ভূমিকা নিয়েছে ঠিকই। নাশকতার আশঙ্কা থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের দলীয় কার্যালয় থেকে বের হতে দেয়া হয়নি।

ফলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়েছে। পুলিশও লাঠিচার্জ করেছে। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র সভাপতি সহ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। যারমধ্যে এখন ১৭ জন কারাগারে রয়েছেন। নাশকতার দুই মামলায় আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন বলে জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের এমন কোন নেতা নেই যার বিরুদ্ধে ২০টির কম মামলা আছে। সর্বোচ্চ ৫৬টি মামলার আসামি পর্যন্ত বানানো হয়েছে বিএনপি’র বেশির ভাগ নেতাকর্মীকে। যাদের প্রতিদিন আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে। দিনে কমপক্ষে ৩-৪টি মামলায় বিভিন্ন বিচারকের এজলাশে হাজির থাকতে হচ্ছে।

একটু হেরফের হলে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করছে আদালত। আর এই পরোয়ানা নিয়ে ঘরে-বাইরে পুলিশের তাড়া খেয়ে বেড়াতে হচ্ছে। দিনের বেশিরভাগ সময় আদালতে কাটিয়ে বিকেলের দিকে দলীয় কার্যালয়ে সাংগঠনিক কাজে যোগ দিলেও সেখানে পরোয়ানা নিয়ে খোঁজাখুঁজি করে পুলিশ। তবুও পুলিশের এই হয়রানি মোকাবিলা করে দলীয় ও সাংগঠনিক কাজে সক্রিয় রয়েছে বিএনপি’র নেতাকর্মীরা।

বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম এ প্রসঙ্গে বলেন, পুলিশ কেন, আপামর জনসাধারণের দল বিএনপিকে ধ্বংস করবে এমন কোনো শক্তি নেই। বিএনপি এমন দল নয় যে, দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ শীর্ষ নেতা ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের কারাগারে আটকে রাখলে নেতৃত্ব সংকট হবে।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেন, চট্টগ্রামে বিএনপি’র মুখোমুখি হওয়ার প্রয়োজন পড়েনি আওয়ামী লীগের। কারণ আমরা যখনই রাজপথে নেমেছি তখনই তারা রাজপথ ছেড়েছে। চট্টগ্রামের রাজপথে বিএনপি কখন সমাবেশ করেছে তা তাদেরও মনে নেই। তাদের কার্যক্রম শুধু দলীয় কার্যালয়ে সীমাবদ্ধ। -এমজমিন
এমটিনিউজ/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে