চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে থেকে স্বাস্থ্য বাতায়নের হেল্প ডেস্ক নম্বর ৩৩৩ এ ফোন করে ত্রাণের অভাবে তিন দিন ধ'রে খেতে পাচ্ছেন না জানিয়ে অভি'যোগ করেছেন এক নারী। ওই অভি'যোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দ্রু'ত ব্যবস্থা নিতে বলা হলে তিনি এলাকায় গিয়ে দেখেন পরিবারটির আর্থিক অবস্থা সচ্ছল। বরং ত্রাণ নেওয়া তো দূরের কথা বর্তমান সময়ে এলাকায় অসহায় মানুষকে সহযোগিতার ক্ষমতা রাখেন মেয়েটির বাবা! পরে জানা গেল আসলেই এসব নম্বরে ফোন করলে কাজ হয় কিনা জানতে কৌতহুলী হয়ে ফোন করেছিল মেয়েটি।
সংশ্লিষ্ট সূ'ত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরের দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায়ের কাছে স্বাস্থ্য বাতায়ন হেল্প নম্বর থেকে ফোন করে জানানো হয় ভাটিয়ারী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত হাসনাবাদ এলাকার জনৈক শাহ আলমের মেয়ে জানিয়েছেন গত তিন দিন ধ'রে তাদের ঘরে রান্না-বান্না বন্ধ হয়ে আছে।
আর্থিক দুরবস্থার কারণে তাদের ঘরে কোনো খাবার নেই। তাই তাদের ত্রাণের প্রয়োজন। দ্রুত তাদেরকে ত্রাণ প্রদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ত্রাণ নিয়ে সেখানে পৌঁছে সংশ্লিষ্ট ভাটিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নাজিম উদ্দিনকে ঘ'ট'নাটি বলে তাদের বাড়িতে যেতে চান।
ত্রাণ চাওয়া মেয়েটির নাম ঠিকানা শুনে চেয়ারম্যান আকাশ থেকে পড়েন। কারণ, এই মেয়েটির বাবা এলাকার মানুষকে সাহায্য করার মতো সামর্থ আছে। সেখানে তারা ত্রাণ চাইতে পারেন এটি চেয়ারম্যানের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হলে তিনি মেয়েটির বাবা শাহ আলমকে ফোন করেন।
ফোনে সব জেনে মেয়েটির বাবাও হ'তবাক। শেষে তিনি মেয়ের সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ইউপি চেয়ারম্যানের কথা বলিয়ে দেন। এ সময় মেয়েটি ক্ষ'মা প্রার্থনা করে জানায়, ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে আসলে কোনো ব্যবস্থা হয় কিনা তা জানতেই তিনি এ ফোন করেছিলেন। এ জন্য যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এখানে ছুটে চলে আসবেন তা তিনি ভাবেননি। এ ঘটনার জন্য ক্ষ'মা প্রার্থনা করেন মেয়েটির বাবাও।
জানতে চাইলে ভাটিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, আমি ইউএনও মহোদয়ের কাছে ঘ'টনা শুনেই অবাক। কারণ, মেয়েটির বাবা এই মুহূর্তেও কয়েক বস্তা চাউল বিতরণ করতে পারেন। এ সক্ষ'মতা তাদের আছে। তারা কেন ত্রাণ চাইবে বুঝতে পারছিলাম না। পরে তার বাবার কাছে জানতে চাইলে তিনিও বিস্মি'ত হন এবং পরে জানান তার মেয়ে ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে কোনো লাভ হয় কিনা জানতে চেয়ে এ ভুল করে ফেলেছে।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় বলেন, একটি পরিবারে তিন দিন ধ'রে ত্রাণের অভাবে রান্না বন্ধ এমন খবর শুনে আমি নিজেও হ'তাশ হয়ে পড়ি। কারণ, আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ দিচ্ছি। তবুও ঘ'টনাটি জেনে আমি সেখানে গেলে জানতে পারি তারা নিজেরাই অন্যদের ত্রাণ বিতরণের সক্ষমতা রাখেন। আসলে না বুঝে নম্বরগুলো যাচাই করতে এরকম অনেকেই করে থাকেন। এটা ঠিক না। এতে সবার হ'য়রানি হতে হয়।