ফারুক তাহের : চলতি মাসেই চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির নতুন কমিটি গঠনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। অপূর্ণাঙ্গ কমিটি দিয়ে বিগত সাত বছর কাটানোর পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের এ উদ্যোগ দলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
বর্তমান সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ কোনো দায়িত্ব দিয়ে মহানগর সভাপতির পদে পরিবর্তন আনা হবে বলেও দলীয় সূত্র বলছে। তৃণমূল পর্যায়ে দলকে গোছাতে সক্রিয় ও শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারবেন— এমন কাউকে এ পদ দেওয়া হতে পারে বলে সূত্রের দাবি।
২০০৮ সালে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে সভাপতি ও ডা. শাহাদাত হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক এবং দস্তগীর চৌধুরী, আবু সুফিয়ান ও শিল্পপতি শামসুল আলমকে সহ-সভাপতি করে মহানগর বিএনপির এ কমিটি গঠন করা হয়। সে সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার হান্নান শাহ (অব.) কাউন্সিলে প্রধান অতিথি থেকে পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের দায়িত্ব দিয়েছিলেন পাঁচ সদস্যের এ কমিটিকে। কমিটি গঠনের দুই বছরের মাথায় দস্তগীর চৌধুরীর মৃত্যু হলে মাত্র চারজনই পাঁচ বছর ধরে নগর বিএনপির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। এ নিয়ে দলের ভিতরে-বাইরে নানা ধরনের অসন্তোষ ও দলাদলি শুরু হলে বছর দু-এক আগে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
তারা দুই দফা চট্টগ্রাম নগর বিএনপির একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটির খসড়া তালিকা কেন্দ্রে পাঠান বলেও জানা যায়। কিন্তু বিএনপির দলীয় রাজনীতির চড়াই-উতরাই ও জাতীয় রাজনীতির পট পরিবর্তনের ফলে কেন্দ্র আর অনুমোদন দেয়নি এ কমিটির। ফলে চট্টগ্রাম বিএনপির বেশ কিছু সক্রিয় নেতা-কর্মী বিচ্ছিন্ন ও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় পুরনো কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠনের নয়া উদ্যোগ চট্টগ্রামে বিএনপির দলাদলির রাজনীতিতে ভিন্নমাত্রিক উষ্ণতা সৃষ্টি করেছে।
দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মীই মনে করেন, নগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি হলে দলীয় অন্তঃকোন্দল ও দীর্ঘদিনের মতবিরোধের কিছুটা হলেও নিরসন হতে পারে। বিএনপির কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা গেছে, খুব শিগগিরই চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হবে। এতে বর্তমান সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর স্থলে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক রাষ্ট্রদূত গোলাম আকবর খোন্দকারকে পদায়ন করা হতে পারে।
এ ছাড়া উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক লায়ন আসলাম চৌধুরী যেন মহানগরের সভাপতি হন, তার জন্যও একটি পক্ষ কেন্দ্রে চেষ্টা-তদবির চালিয়ে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে গোলাম আকবর খোন্দকার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা রাজনীতি করি দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য। দেশ এবং দলের বৃহত্তর স্বার্থে যদি কোনো দায়িত্ব নিতে হয় তা আমি এড়িয়ে যেতে পারব না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ও রাজনৈতিক ইতিহাসে চট্টগ্রাম একটি ফ্যাক্টর।’
নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘খসরু ভাই (আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী) বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী। অনেক অভিজ্ঞ একজন পলিটিশিয়ান। দলের প্রয়োজনে তাকে যদি কেন্দ্রেই বেশি মনোযোগী হতে এবং সময়দান করতে হয়, তাহলে চট্টগ্রামে সভাপতির পদে এমন একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হোক যার চট্টগ্রাম রাজনীতিতে গ্রহণযোগ্যতা এবং রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাতে সংগঠনকে সক্রিয় রাখতে এবং কাজ করতে সুবিধা হবে।’-বিডি নিউজ
১০ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ/এসএস/এসবি