এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির নাজিরহাট পৌরসভার বেতুয়ারকুল গ্রামের মাদরাসাশিক্ষক ও মসজিদের ইমাম জাহেদুল ইসলাম তালুকদার (৪৫)। নিষ্ঠুরতম এক ঘটনায় নিস্তব্ধ হয়ে গেছেন। জীবনে অনেক মানুষের জানাজা পড়িয়েছেন তিনি। কিন্তু সোমবার তিনি যার জানাজা পড়াচ্ছিলেন, সে ছিল তার একমাত্র মেয়ে আইনুর তাজফি।
তিনি বললেন, বারবার চেষ্টা করেও আমার মুখ দিয়ে জানাজার নিয়ত, দোয়া আসতেছিল না। বাক্শক্তিহীন হয়ে পড়ছি। জীবনে অনেক মানুষের জানাজার নামাজ পড়াইছি। কিন্তু আমার ছোট্ট মেয়ের জানাজা আমাকে পড়াইতে হবে স্বপ্নেও ভাবিনি। যখন মুসল্লিদের সামনে আমি জানাজার নিয়ত করতে যাই, তখন আমার মুখ দিয়ে কিছুই আসতেছিল না। দোয়াটা আমার মুখ দিয়ে আসতেছিল না। তিনবার করে আমাকে দোয়া পড়তে হয়।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন জাহেদুল ইসলাম তালুকদার। এর আগে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় উপজেলার নাজিরহাট পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের স্কুলের গেটে ঢোকার সময় জাহেদুলের মেয়ে আইনুর তাজফিকে চাপা দেয় একটি জিপ (চাঁদের গাড়ি)। এ ঘটনায় আইনুর ঘটনাস্থলেই মারা যায়। বেপরোয়া ওই চাঁদের গাড়িটি আইনুর ছাড়াও তিন শিক্ষার্থীকে পেছন থেকে চাপা দিয়েছিল।
আহত অপর শিক্ষার্থীরা হলো মুফতারিন জাহান (৭), মায়শা মনি (৯) ও মেঘলা দেবী (৮)। তারা সবাই সুয়াবিল ইসলামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
আইনুরের মা ইসমত আরা (৩০) একটা খাতা দেখিয়ে বললেন, দেখেন, কী সুন্দর হাতের লেখা আমার মেয়ের। ক্লাস থ্রির বাচ্চার হাতের লেখা কখনো এমন হয়? দেখলে মনে হবে কোনো কলেজে পড়ুয়া মেয়ের লেখা।
সুয়াবিল ইসলামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওসমান গণি গণমাধ্যমকে বলেন, এত ভালো মেধাবী মেয়েটিকে এভাবে হারিয়ে আমরা শোকে পাথর। সে প্রতিটা শ্রেণিতে প্রথম হয়েছে। স্কুল এলাকায় চাঁদের গাড়ি চাপার ঘটনার বিচার চাই আমরা।