শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:২২:০২

খাতুনগঞ্জে আজ হঠাৎ পেঁয়াজের কেজি কত হলো জানেন?

খাতুনগঞ্জে আজ হঠাৎ পেঁয়াজের কেজি কত হলো জানেন?

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন মিললেও বাজারে স্বস্তি ফেরেনি। পাইকারি বাজারে আবারও ঊর্ধ্বমুখী পেঁয়াজের দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সীমিত আমদানি ও নিয়ন্ত্রণহীন বাজার ব্যবস্থার কারণে দাম কমছে না।

পেঁয়াজের বাজারে লাগামহীন ঊর্ধ্বমুখিতা যেন থামছেই না। ভারত থেকে আমদানির অনুমোদন দেওয়ার পর কয়েক দিনের জন্য দাম কিছুটা কমলেও এখন আবারও বাড়তে শুরু করেছে। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। খুচরা বাজারে এর চেয়ে আরও বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।

খাতুনগঞ্জে পাইকারি বাজারে কমিশনভিত্তিক পেঁয়াজ বেচাকেনা হয়ে থাকে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সীমান্ত থেকে মুঠোফোনের মাধ্যমে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তারা বলছেন, সরকার পুরোপুরি পেঁয়াজ আমদানি উন্মুক্ত না করে বাছাই করা কয়েকজন ব্যবসায়ীকে আমদানির জন্য আইপি দিয়েছে। এতে বাজারে চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজ আসছে না, ফলে দাম কমার সুযোগ তৈরি হচ্ছে না।

সম্প্রতি হঠাৎ করেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায় এবং এক পর্যায়ে তা সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে গত শনিবার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেয় সরকার। রবিবার থেকেই আমদানি শুরু হয়। আমদানির খবরে কয়েক দিনের জন্য পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত দাম কমে।

তবে সেই স্বস্তি স্থায়ী হয়নি। আমদানির মধ্যেও ফের দাম বাড়তে শুরু করায় ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত আমদানি এবং কার্যকর নজরদারি না থাকলে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা কাটবে না।

জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের আড়তদার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী বলেন, সরকার পেঁয়াজ আমদানি উন্মুক্ত করেনি। আইপি প্রদানের অনিয়ম হয়েছে। আমদানি সকল ব্যবসায়ীর জন্য উন্মুক্ত করে দিলে বাজারে দাম কমে যেত। এখন বাজারের চাহিদা অনুপাতে পেঁয়াজ আসছে না। সীমিত আকারে কয়েক গাড়ি পেঁয়াজ আসলে তা অল্প সময়ে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। দেশীয় মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে আসতে আরো ১০ দিন সময় লাগতে পারে। ”

বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রামে খাতুনগঞ্জ, পাহাড়তলী, চাক্তাইসহ আরো কয়েকটি জায়গায় পেঁয়াজের পাইকারি বাজার রয়েছে। চট্টগ্রামে পেঁয়াজের কোনো আমদানিকারক নেই। সবাই কমিশনে বিক্রি করে থাকেন। গড়ে উঠেছে এক অসাধু চক্র। এতে সীমান্ত থেকে মোবাইল ফোনে চট্টগ্রামে পেঁয়াজের দাম ‘ওঠানামা’ করানো হয়। প্রতি ঘণ্টায় দাম পরিবর্তন হয়। এতে সীমান্তে আমদানিকারক পর্যায়ে দাম নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে দেশীয় বাজারে প্রভাব পড়বে না বলে বিক্রেতাদের অভিমত।

চট্টগ্রামে পেঁয়াজের বাজারে অনিয়ম ঠেকাতে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর বিভিন্ন বাজারে অভিযান পরিচালনা করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভোক্তা অধিকারের এক কর্মকর্তা জানান পাইকারি ও খুচরা বাজারে বিক্রেতাদের কাছে পেঁয়াজ কেনাবেচার কোনো কাগজপত্র নেই। ইচ্ছামতো করে বিক্রি করছে। অনিয়ম করছে আমদানিকারকরা।

খাতুনগঞ্জে দুই শতাধিক পেঁয়াজের আড়তদার ব্যবসায়ী রয়েছে। গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে প্রতিটি আড়তে পেঁয়াজ-রসুনে পরিপূর্ণ। দেশীয় পেঁয়াজও বাজারে রয়েছে। সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু তারপরও দাম কমাচ্ছে না। বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, আমদানি পণ্য কমিশনে বাণিজ্যের মধ্যে ব্যাপক অনিয়মের সুযোগ রয়েছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে