বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ, ২০১৬, ০৭:১২:১৫

প্রেমের ফাঁদ পাতা শহর!

প্রেমের ফাঁদ পাতা শহর!

চট্টগ্রাম : প্রেমের ফাঁদ পাতা শহর! ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখিয়ে অন্ধকারে নিমজ্জিত করা হয়া।  অবশ্য এ ঘটনায় সবাইকে এক পাল্লায় মাপলে চলবে না।  কিছু বখাটে শ্রেণির যুবক কিশোরীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাদের সর্বস্ব কেড়ে নিচ্ছে।

 
ভালোবেসেছিল দুজনের দুজনার হয়ে।  এ স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে ছলনায় কিশোরীকে নিয়ে আসা হয় শহরে।  এরপর শুরু হয় কাহিনী।  পাল্টে যায় প্রেমিকের আচরণ।

কিশোরীর অনিচ্ছা স্বত্ত্বেও বাধ্য করা হতো অনৈকিকাজে।  অনেক সময় কিশোরী বাধা দিলেও চলতো অমানুষিক নির্যাতন।  প্রেমিকের ডাকে ছুটে আসা কিশোরীরা শহরে দালালদের কাছে বিক্রি হয়ে যায়।  জায়গা হয় অন্ধকার গলিতে।

নগরীর পাঁচলাইশ থানার হিলভিউ আবসিক এলাকার একটি বহুতল ভবনের ফ্ল্যাটে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বুধবার দুপুরে তিন কিশোরী মুন্নী আক্তার (১৬), সামিনা বেগম (১৮) ও নাসিমা আক্তারকে (১৮) উদ্ধার করে।  এরপর  তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।  

ভুক্তভোগী ওই তিন কিশোরীকে তিন থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত আটকে রেখে অনৈতিক কাজে ব্যবহার করা হয়।  কিশোরীদের মধ্যে নাম প্রকাশ করার শর্তে জানান, প্রথমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাকে বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে শহরে নিয়ে আসা হয়।  

তিনি জানান, কিন্তু শহরে এসে তার আচরণ পাল্টে যায়।  তাকে দিয়ে অনৈতিক কাজ করতে বাধ্য করা হয়।  রাজি না হলে চলে অমানুষিক নির্যাতন। পরে ইউসুফের (দালাল) কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়া হয়।

পুলিশ বলছে, নগরীতে এ ধরনের কমপক্ষে ২০-২৫টি চক্র রয়েছে, যারা নারী বেচাকেনা এবং অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত।  তারা বিভিন্ন ফ্ল্যাটে ভাড়া বাসা নিয়ে আবার অলিখিত অন্ধকার গলিতে এ ব্যবসা পরিচালনা করছে।

পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, বুধবার উদ্ধার হওয়া তিন কিশোরী প্রতারকের খপ্পরে পড়ে দালালদের কাছে বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছে।  এর সত্যতাও পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তার হওয়া তিন দালাল তা স্বীকার করেছে।  তাদের নামে অনৈতিক কাজ ও মানবপাচার আইনে দু’টি মামলা হয়েছে।

এ ব্যবসার সাথে নগরীতে ২০-২৫টি চক্র জড়িত বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে হিলভিউ আবসিকের ৯ নম্বর বাড়ির তৃতীয় তলা থেকে অনৈতিককাজে বাধ্য করার দায়ে নাছির উদ্দিন প্রকাশ হাবিব (৪৫), আলী হোসেন (২৮) ও কুলসুম আক্তারকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়।  এ সময় ওই ফ্ল্যাট থেকে আরো তিন কিশোরীকে উদ্ধার করে পুলিশ।

বাড়ির মালিক ইঞ্জিনিয়ার তাজুল ইসলামের বরাত দিয়ে এসআই আবুল কাশেম জানান, গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন এ মাসেই তার ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন।  মঙ্গলবার রাতে ওই ফ্ল্যাটে বেশ কয়েকজন পুরুষের আসা যাওয়ার বিষয়টি টের পেয়ে বাড়ির দারোয়ান তাজুল ইসলামকে জানায়।

পরে দুপুরের দিকে তিন কিশোরীর একজন কৌশলে পালিয়ে এসে বিষয়টি জানালে তিনি পুলিশকে খবর দেন।  এর আগে এ চক্রটি নগরীর খুলশী এলাকার একটি ভবনে এ ব্যবসা পরিচালনা করতো বলে জানান এসআই আবুল কাশেম।
১০ মার্চ,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে