শনিবার, ২৫ জুন, ২০১৬, ০৩:১৫:১৭

হত্যা-রহস্যের জট খুলছে

হত্যা-রহস্যের জট খুলছে

চট্টগ্রাম: পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার রহস্যের জট খুলছে। একে একে ধরা পড়ছে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া কিলাররা। এমনকি উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটিও। হত্যাকাণ্ডে শুধু মোটরসাইকেল আরোহী ওই তিনজনই নয়, আরও একাধিক ব্যক্তি জড়িত। শুরু থেকে হত্যার সঙ্গে জঙ্গি সম্পৃক্ততার কথা বলা হলেও আটকদের কাছ থেকে এ ধরনের কোনো তথ্য পায়নি পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হত্যাকারীরা সবাই ভাড়াটে, টাকার বিনিময়ে তারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তবে কেন এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে, সে ব্যাপারে পুলিশ এখনও অন্ধকারে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। যদিও মিতুর হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে শুক্রবার পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খোলেনি পুলিশ। এ প্রসঙ্গে সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার বলেন, আজ-কালের মধ্যে প্রেস ব্রিফিং করে আপনাদের সুখবর জানাতে পারব।


তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, মিতু হত্যার সব রহস্য উদ্ঘাটন হয়েছে। আসামি গ্রেফতার হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে অস্ত্রও। যে কোনো সময় সাংবাদিকদের সামনে আটক ব্যক্তিদের হাজির করা হবে। জানা গেছে, মিতু হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রানীরহাট এলাকার বাসিন্দা আবু মুছা (৪৫) ও নগরীর বাকলিয়া থানাধীন রাজাখালী এলাকার বাসিন্দা এহতেশামুল হক ভোলা (৩৮) নামে দু’জন রয়েছে। এ দু’জনের পরিবারের সদস্যরা জানান, আবু মুছাকে মঙ্গলবার সকালে চকবাজার এলাকা থেকে আর এহতেশামুল হক ভোলাকে একই দিন বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে রাজাখালী গুলবাহার কমিউনিটি সেন্টারের সামনে থেকে পুলিশ পরিচয়ে আটক করা হয়।


পুলিশ সূত্র জানায়, আটক ছয়জনকে নিয়ে চলছে পুলিশের অভিযান। চারজনের বাড়ি রাঙ্গুনিয়া ও একজনের বাড়ি হাটহাজারী উপজেলায়। এর মধ্যে দুইজন ২০১২ সালে রাঙ্গুনিয়ায় সংঘটিত দুটি হত্যা মামলার আসামি। তারা দীর্ঘদিন কারাগারে ছিল। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট, র‌্যাব, সিআইডি, ডিবি, পিবিআই, কাউন্টার টেররিজমের লোকজন তাদের কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এদিকে বাকলিয়া থানাধীন খাতুনগঞ্জের কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, ভোলার দেয়া স্বীকারোক্তিতে মিতু হত্যায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রসহ দুটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। মিতুকে হত্যার পর অস্ত্রটি খাতুনগঞ্জের মাহবুব কলোনির এক রিকশাচালকের কাছে জমা রাখা হয়। পুলিশ ভোলাকে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে মাহবুব কলোনি ঘেরাও করে ওই রিকশাচালকের কাছ থেকে অস্ত্র দুটি উদ্ধার করেছে।


এ প্রসঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি) কামরুজ্জামান বলেন, মিতু হত্যার আসামি গ্রেফতার কিংবা অস্ত্র উদ্ধার সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, মিতু হত্যায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি বোয়ালখালীর শহিদুল্লাহর। এটি কয়েক মাস আগে চুরি করে লালু নামে এক পেশাদার মোটরসাইকেল চোর। দুই হাত ঘুরে গাড়িটি চলে যায় রাঙ্গুনিয়া রানীরহাটের একটি গ্যারেজে। ওই গ্যারেজ থেকে গাড়িটি কেনেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। তিনি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে মেম্বার প্রার্থী ছিলেন। ঘটনার কয়েকদিন আগে ভাইয়ের কাছ থেকে মোটরসাইকেলটি নগরীতে নিয়ে আসেন হেলমেট পরা সেই আরোহী। ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় নগরীর জিইসি মোড়ে দুর্বৃত্তদের উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত ও গুলিতে নিহত হন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম ?মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার নিজে বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা করেন।-যুগান্তর

২৫ জুন, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে