মঙ্গলবার, ২৮ জুন, ২০১৬, ১২:৫৭:১৩

সেদিন খুনির পায়ে পড়ে আকুতি করেছিলেন মিতুর ছেলে মাহির

সেদিন খুনির পায়ে পড়ে আকুতি করেছিলেন মিতুর ছেলে মাহির

চট্টগ্রাম থেকে : পুলিশের বড় সোর্স রাঙ্গুনিয়ার আবু মুছা। তার নির্দেশেই এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে খুন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আসামি মোতালেব ওরফে ওয়াসিম (২৮)। আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন আসামি ওয়াসিম ও আনোয়ার।

চট্টগ্রাম শহরের জিইসি মোড়ে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়ার পর নবী নামে ঘাতক মিতুর পেটে প্রথমে ছুরি মারে। আর এসময় মিতুর ছেলে মাহিরকে ধরে রাখে আনোয়ার। মাহির চিৎকার করে আকুতি জানায়, আনোয়ারের পায়ে পড়ে হাতজোড় করে বলে, ‘তোমরা আমার মাকে মেরো না, তাকে ছেড়ে দাও।’ কিন্তু তাতে খুনিদের হৃদয় গলেনি। নবী মিতুর পেটে উপযুপরি আটবার ছুরি মারে ও ওয়াসিম মিতুর মাথায় গুলি করে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী জবানবন্দির  বিস্তারিত জানাতে অপারগতা প্রকাশ কলেও সংশ্লিষ্ট একটি বিশেষ সূত্রে এসব জানা গেছে।

সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে তারা বলেন, হত্যার উদ্দেশ্য সম্পর্কে না জেনেই মূলত টাকার বিনিময়ে মিতুকে হত্যা করতে ৭ জনের একটি টিম অংশ নিয়েছিল। আবু মুছা নামে এক ব্যক্তির নির্দেশনাতেই পুরো মিশনটি পরিচালিত হয়। হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারীরা হলো- আবু মুছা, ওয়াসিম, আনোয়ার, রাশেদ, নবী, কালু ও শাহজাহান। মুছা নিজেকে একজন পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের এক কর্মকর্তার সোর্স বলে দাবি করেছিলেন বলে জবানবন্দিতে জানান ওয়াসিম ও আনোয়ার।

খুনের বর্ণনায় আনোয়ার জানান, মিতুকে ছুরিকাঘাত করার সময় তার সাথে থাকা ছেলে মাহিরকে আনোয়ার নিজে ধরে রাখেন। সেসময় মাহির তার মাকে না মারতে আনোয়ারের পা ধরে করজোড়ে আকুতি করে বলে, ‘তোমরা আমার মাকে মেরো না, তাকে ছেড়ে দাও।’ তারপরও নবী মিতুকে উপর্যুপরি আটবার ছুরিকাঘাত করে এবং ওয়াসিম মিতুর মাথায় গুলি করে।

অবশ্য ওয়াসিম জবানবন্দিতে বলেন, মিতুর মাথায় গুলি করে আবু মুছা। ওই গুলিতেই তার মৃত্যু নিশ্চিত হয়। তবে নিজে গুলি করেছিলেন কিন্তু সেটি মিস ফায়ার হয়ে বলে স্বীকার করেছেন ওয়াসিম।

গতকাল রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার দাবি করেন, ওয়াসিমের গুলিতেই মিতুর মৃত্যু হয়।

প্রসঙ্গত, গত ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে গিয়ে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত ও গুলিতে নিহত হন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু।  পরদিন পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

২৮ জুন ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে