নাফ নদীতে রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকাডুবি, শিশুসহ নিখোঁজ ৮

কক্সবাজার থেকে : কক্সবাজারের টেকনাফে নাফ নদী পারাপারের সময় রোহিঙ্গা বোঝাই এক নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে শিশুসহ ৮ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে। সোমবার ভোররাতে হ্নীলা জাদিমুড়া সংলগ্ন নাফ নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, ওই সময় মিয়ানমারের রাইম্যাবিল এলাকা থেকে ১৫/১৬ জন রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু বোঝাই একটি নৌকা বাংলাদেশের জাদীমুড়া ঘাটে আসার সময় হঠাৎ করে মাঝপথে ডুবে যায়। এসময় নৌকায় থাকা বয়স্ক নারী-পুরুষরা ডুবন্ত নৌকা ধরে প্রাণে বাঁচার চেষ্টা করে কয়েকজন কোন মতে রক্ষা পেলেও হুমায়ুন কবির ও রোকেয়া নামের এক দম্পতির তিন সন্তান (আনোয়ার ইব্রাহীম (৫), আফসানা বিবি (৩), মো: ইমরান (২) এবং আমির হোসেন ও মোরতাজা দম্পতির সন্তান সাজেদ হোছাইনসহ (১) আরও দুই মেয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়।

এছাড়া অজ্ঞাত এক নারী ও ৩০ বছরের এক যুবকও নদীতে নিখোঁজ হয়। এসময় এক নারী ও এক কিশোরকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কক্সবাজারে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানায় ভুক্তভোগী রোহিঙ্গা হুমায়ুন কবির ও রোকেয়া।

স্থানীয়  হ্নীলা ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী জানান, নাফ নদীতে রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকা ডুবির ঘটনার খবর পাওয়া গেছে, তবে দালালরা কিছু লোককে চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার পাঠিয়েছে। আবার শিশুসহ কিছু লোক এখনো নিখোঁজ রয়েছে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী রোহিঙ্গা হুমায়ুন কবির ও রোকেয়া জানায়, মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হত্যা, নির্যাতন, নিপীড়ন সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়ে প্রাণ রক্ষায় বাংলাদেশে চলে আসার সময় নদীতে নৌকাটি দুঘর্টনার কবলে পড়ে। আমাদের পরিবারের ৩ সন্তানসহ ৮ জন নিখোঁজ রয়েছে।

এদিকে টেকনাফ হ্নীলা জাদীমুরা এলাকার (ধাতু জাদী সংলগ্ন পূর্ব পাশে) চিহ্নিত আদম পাচারকারী দালাল নুরুল বশর, খাইরুল বশর, ইমাম হোছনসহ প্রভাবশালী কয়েকটি সিন্ডিকেট মোটা অংকের বিনিময়ে আদম পাচার বাণিজ্যে মেতে উঠেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ সিন্ডিকেট ছাড়াও জাদিমুড়া এলাকায় কয়েকটি সিন্ডিকেট নাফ নদী সীমান্ত দিয়ে আদম পাচার কাজে লিপ্ত রয়েছে।

এদিকে মিয়ানমারের সহিংস ঘটনার পর থেকে জাদীমুড়ার কয়েকটি আদম ঘাট দিয়ে মোটা অংকের বিনিময়ে রাতের আধাঁরে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে বলে স্থানীয়রা প্রতিবেদককে জানায়। তবে আদম পাচারকারী সিন্ডিকেটের সাথে কারা সম্পৃক্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী।

এদিকে একই দিন বিকালে টেকনাফ মডেল থানার এসআই মাসুদ মুন্সীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজিরপাড়া নাফনদীর উপকূলে ভাসমান এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে। তবে উদ্ধারকৃত লাশের পরিচয় পাওয়া না গেলেও এটি রোহিঙ্গা বোঝায় নৌকা ডুবিতে নিখোঁজ যুবকের লাশ বলে ধারণা করা হচ্ছে।  বিডি প্রতিদিন

২২ নভেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি