রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১১:০৩:৪৯

১১ দিনের সংসারে, স্বামীকে মনের কথা বলতে পারেননি রোহিঙ্গা নববধূ!

১১ দিনের সংসারে, স্বামীকে মনের কথা বলতে পারেননি রোহিঙ্গা নববধূ!

নিউজ ডেস্ক : শ্যাম বর্ণের এক তরুণী। ত্রাণের ছোট্ট ব্যাগ হাতে। নির্বাক দাঁড়িয়ে কক্সবাজারের উখিয়ায় কুতুপালংয়ের ক্যাম্পের সামনে। বয়স আনুমানিক ১৮/১৯ হবে। বিধ্বস্ত চেহারা। পায়ে কাদামাটি। পোশাক-আশাক দেখেই বোঝা যায় নির্যাতনের শিকার।

এগিয়ে গেলাম কথা বলতে। অমনি শুরু হলো কান্না। দুচোখে বেয়ে জলের ধারা। প্রতি ফোঁটা চোখের পানিতে যেন হাহাকার আর হতাশার চিহ্ন। আশে-পাশের লোকদের কাছে জানতে চাইলাম তার সম্পর্কে। তারা জানালেন নির্মম এক ঘটনা।

বিয়ে হয়েছে মাত্র ১১দিন। নতুন সংসার। কিন্তু এরই মধ্যে হারালেন স্বামীকে। তার সামনেই স্বামীর হাতপা বেঁধে গুলি করলো মিয়ানমার সেনারা। গুলি করেই ক্ষান্ত হয়নি তারা। গলাও কেটে ফেললো। তারপর নববধূকে মৃত স্বামীর লাশের পাশেই নিযার্তন করলো সেনারা।

তরুণীটি একটু স্থির হতেই জানতে চাইলাম নাম। বললেন, আয়েশা খাতুন। জানতে চাইলে খুলে বললেন সেদিনের ঘটনা। সেদিন কয়েকজন আমি অস্ত্রসহ এসে জ্বালিয়ে দিলো তাদের ঘর-বাড়ি। এরপর তার স্বামীকে বেঁধে টেনে নিয়ে গেল গাছের নিচে।

তার চোখের সামনেই প্রথমে পায়ে তারপর বুকে গুলি করলো সেনারা। এরপর এলো তার পালা। কয়েকজন আর্মি মিলে স্বামীর লাশের পাশেই নির্যাতন করলো।আয়েশার সংসার মাত্র ১১ দিনের। তার নতুন পৃথিবীটা সাজাতে চেয়েছিল নিজের মতো করে। তার সেই স্বপ্নের কথা বলতে চেয়েছিলেন স্বামীকে। কিন্তু তা আর হলো না। এলাকা জুড়ে মিয়ানমার আর্মিদের ভয়াবহ তাণ্ডব। এর মধ্যেই হয়ে গেছে বিয়ে। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি হয়তো থাকবে না বেশিদিন। তখন সুখে সংসার করা হবে। এমন আশাই দেখছিলেন আয়েশা। কিন্তু সবই দুঃস্বপ্ন।

স্বামীকে নিজের মনের কথা বলা আর হলো না। ছোট ছোট স্বপ্ন- ইচ্ছের কথাও জানানো হলো না প্রিয় মানুষটাকে।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে