কক্সবাজার থেকে : গত বছরের কোরবানির ঈদের আগে কক্সবাজার অঞ্চলের পশুর হাট মাতিয়েছিল সুঠামদেহী ষাঁড় 'রাজকুমার'। একাধিক বাজারে এই গরু নিয়ে যাওয়া হলেও আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় বিক্রি করতে পারেননি মালিক। ওই সময় রাজকুমারের ওজন ছিল প্রায় ২৫ মণ।
তবে আরো এক বছর লালন-পালন করায় এবার গরুটির ওজন দাঁড়িয়েছে ৩০ মণে- অর্থাৎ ১২০০ কেজিতে। করোনা পরি'স্থিতিতে এবারের কোরবানির পশুর হাট আদৌ জমবে কি না সেই শ'ঙ্কা থাকলেও ঈদ ঘনিয়ে আসার আগে থেকেই চারদিকে 'রাজকুমার'কে নিয়ে চলছে মাতামাতি। মালিক আবু ওবাইদ বাদল এবার গরুটির দাম হাঁকাচ্ছেন ২০ লাখ টাকা। গত বছর হাঁ'কিয়েছিলেন ১৫ লাখ টাকার মতো।
তবে এরই মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অনেক ক্রেতাই এই রাজকুমারকে ১০ লাখ টাকায় কেনার দর দিয়েছেন। কিন্তু তিন বছর ধ'রে এই গরু লালন-পালনসহ সার্বিক হিসাবে এই দামে গরুটি বিক্রি করলে তার যথেষ্ট লো'কসান হবে বলে জানিয়েছেন মালিক। রাজকুমারের মালিক আবু ওবাইদ বাদলের বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নের দরবেশকাটা গ্রামে।
তিনি কৃষিকাজের পাশাপাশি নিজের জায়গায় গড়ে তুলেছেন বাদল ডেইরি ফার্ম। সেই ফার্মে বর্তমানে গরুরসংখ্যা ৪৪টি। আবু ওবাইদ বাদলের দাবি, তার এই 'রাজকুমার' জেলার মধ্যে সর্বোচ্চ ওজনের গরু। এই পরিমাণ ওজনের গরু জেলার মধ্যে আর নেই। কোনো ধ'রনের শরীরবর্ধক ওষুধ প্রয়োগ না করেই খড়, ভুসি, কমলা, মাল্টা, চিঁড়া, সয়াবিন গোটা, গুড়সহ দেশীয় খাবার খাইয়ে গরুটিকে লালন-পালন করেছেন।
বিদ্যুৎচালিত চারটি পাখা দিয়ে সার্বক্ষণিক গরুটিকে শীতল বাতাসও দেওয়া হয়। নিজে ছাড়াও রাজকুমারের দেখভাল করতে একজন কর্মচারীও নিয়োজিত রয়েছেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুপন নন্দীও প্রতিনিয়ত রাজকুমারের খোঁ'জ রাখেন এবং নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে থাকেন।
মালিক আবু ওবাইদ বাদল বলেন, ''গত বছর কোরবানির পশুর হাটে রাজকুমারকে বিক্রি করা যায়নি আশানুরূপ দাম না পাওয়ায়। এবারের করোনাকালে গরুটি নিয়ে চিন্তায় আছি, সঠিক মূল্যে বিক্রি করতে পারব কি না। এর পরও আমি প্রস্তুত রয়েছি এবার রাজকুমারকে বিক্রি করে দিতে। চকরিয়ার ঐতিহ্যবাহী ইলিশিয়ার পশুর হাটে 'রাজকুমার'কে তোলা হবে। যদি উচিত মূল্যে বিক্রি করতে পারি, তাহলেই আমার এত দিনের পরিশ্রমের সার্থকতা আসবে।'