চকরিয়া (কক্সবাজার) : হেফাজতে ইসলাম নেতা মামুনুল হকের রিসোর্টকাণ্ডের ঘটনায় সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় কৃষক লীগের এক নেতাকে মারধর শেষে পায়ের রগ কেটে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার সকালে কক্সবাজারের পেকুয়ায় ‘তুই হেফাজতের বিরুদ্ধে বেশি লেখালেখি করেছিস’ বলে এই বর্বর হামলা চালানো হয়েছে। আহত সরওয়ার উদ্দিনকে প্রথমে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহত সরওয়ার উদ্দিন পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি। তিনি ওই ইউনিয়নের সবজীবন পাড়ার মৃত মোহাম্মদ আলমের ছেলে। এ ঘটনায় আহত সরওয়ার উদ্দিনের পক্ষে গতকাল মঙ্গলবার পেকুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এতে অভিযুক্ত করা হয়েছে হেফাজতকর্মী ও সাবেক শিবির ক্যাডার মুবিনুল হক ও জালাল উদ্দিনকে। এই দুজনের বিরুদ্ধে নাশকতা এবং বন আইনেও মামলা রয়েছে।
বারবাকিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হকের নারী কেলেঙ্কারি নিয়ে সম্প্রতি ফেসবুকে পোস্ট দেন কৃষক লীগ নেতা সরওয়ার উদ্দিন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে হত্যার উদ্দেশ্যে সরওয়ারের ওপর হামলা চালায় সাবেক শিবির ক্যাডার মুবিনুল হক ও জালাল উদ্দিনসহ একদল হেফাজতকর্মী। তারা লোহার রড দিয়ে সরওয়ারের শরীরে আঘাত করে এবং তাঁর ডান পায়ের রগ কেটে দেয়।’
আহত সরওয়ার উদ্দিন মোবাইল ফোনে জানান, গত সোমবার সকাল ১১টার দিকে বারবাকিয়া ইউনিয়নের ফাঁসিয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। এরপর পাশেই মানিকের দোকানে নাশতা করতে যান। এ সময় দোকানের ভেতর বসে থাকা সাবেক শিবির ক্যাডার মুবিনুল হক ও জালালের নেতৃত্বে একদল হেফাজতকর্মী তাঁকে ঘিরে ধরে। তারা ‘তুই হেফাজতের বিরুদ্ধে বেশি লেখালেখি করেছিস’ এবং বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করে তাঁকে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকে। এক পর্যায়ে ধারাল অস্ত্র দিয়ে তাঁর ডান পায়ের রগ কেটে দেয়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার দাবি করেন।
কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম বলেন, ‘বর্বর এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা এবং গ্রেপ্তার করতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ পেকুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কানন সরকার বলেন, ‘খবর পাওয়ামাত্রই ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়। এসংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেটি তদন্ত করতে একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা মিললে মামলা দায়েরসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’