এমটি নিউজ ডেস্ক : শিশু অর্ক, আয়ুষ্মান, অভি ভোর থেকে উপোস। ক্ষৌরকর্ম সেরে সকাল ৯টায় তাদের গোসল করানো হয়। পরানো হয় ধুতি। ছোট্ট তিন শিশুর এত সব প্রস্তুতির কারণ একসঙ্গে তাদের বাবার পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পাদন।
তিন শিশুকে পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পাদনে সহযোগিতা দেন সদ্য স্বামীহারা মায়েরা। পাঁচ ভাইয়ের মৃত্যুর শোককে পাথরচাপা দিয়ে সন্তানদের পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পাদনে সহায়তা দিতে হয় মায়েদের। স্বজনরা প্রার্থনা করেন দুর্ঘটনায় আহত হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা রক্তিম শীলের সুস্থতার জন্য। আনুষ্ঠানিকতা শেষে সন্ধ্যায় তিন শিশু আহার গ্রহণ করে।
গতকাল শুক্রবার কক্সবাজারের চকরিয়ার মালুমঘাটের হাসিনাপাড়ার প্রয়াত সুরেশ চন্দ্র শীলের পাঁচ ছেলের শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে এই দৃশ্য দেখে উপস্থিত কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। স্বজনরা ডুকরে কেঁদে ওঠেন। ৮ ফেব্রুয়ারি বাবার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা সারতে গিয়ে এলাকার মহাসড়কে পিকআপের চাপায় পাঁচ ভাই নিহত হন।
সুরেশের নিহত পাঁচ সন্তান হলেন অনুপম শীল, নিরূপম শীল, দীপক শীল, চম্পক শীল ও স্মরণ শীল। অর্কের বাবা অনুপম, মা পপি শীল। আয়ুষ্মানের বাবা দীপক, মা পূজা শীল। অভির বাবা স্মরণ, মা কৃষ্ণা শীল। চম্পকের স্ত্রী দেবীকা শীলের দুই সন্তান। নিরূপমের স্ত্রী গীতা শীলের সন্তান নেই।
গত ৩০ জানুয়ারি মারা যান সুরেশ চন্দ্র শীল। তাঁর ছোট ভাই চিত্তরঞ্জন শীল জানান, তাঁর বড় ভাইয়ের মৃত্যুর ১০ দিনের মাথায় ৮ ফেব্রুয়ারি বাড়ির কাছে মহাসড়কের পাশে দাঁড়ানো অবস্থায় পিকআপচাপায় একসঙ্গে নিহত হন তাঁর পাঁচ ভাইপো অনুপম শীল, নিরূপম শীল, দীপক শীল, চম্পক শীল ও স্মরণ শীল।
ওই সময় গুরুতর আহত হন আরেক ভাইপো রক্তিম শীল। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম জেনালের হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন। আর রক্তিমের দুই বোনের মধ্যে হীরা শীলের এক পা কেটে ফেলা হয়েছে। তিনি স্থানীয় মালুমঘাট মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার ভয়াবহতা দেখে সহ্য করতে না পেরে রক্তিমের আরেক ভাই প্লাবন শীল ব্রেন স্ট্রোক করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আরেক বোন মুন্নি শীল সুস্থ আছেন।