শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৬:৩০:৩৩

বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্রের সরঞ্জাম উদ্ধার

বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্রের সরঞ্জাম উদ্ধার

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : কক্সবাজারের রামুতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্রের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় একটি মিনি পিকআপসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়- কয়েকজন ব্যক্তি মায়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থানরত একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর কাছে আগ্নেয়াস্ত্রের সরঞ্জাম সরবরাহের উদ্দেশ্যে রামু হয়ে নাইক্ষ্যংছড়ির দিকে যাচ্ছিল।

এই তথ্যের ভিত্তিতে রামু থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়ার নেতৃত্বে এসআই (নিরস্ত্র) মোহাম্মদ আনোয়ারসহ পুলিশের একটি দল রাত ১টা ৪৫ মিনিটে রামু থানাধীন জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের চা বাগান–নাইক্ষ্যংছড়ি সড়কের মাথায় হোটেল আল-মদিনার সামনে অস্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপন করে।

এ সময় একটি মিনি পিকআপ চেকপোস্ট অতিক্রম করার চেষ্টা করলে পুলিশ থামার সংকেত দেয়। সংকেত অমান্য করে গাড়িটি পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে তিনজনকে আটক করে। পরে গাড়ি তল্লাশি করে ৩২টি সাদা প্লাস্টিকের বস্তার ভেতর থেকে ১ হাজার ৬০০ পিস আগ্নেয়াস্ত্রের ম্যাগাজিনের বাউন্ডলি উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা স্বীকার করেছে যে উদ্ধার করা বাউন্ডলিগুলো মায়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থানরত একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছে সরবরাহের উদ্দেশ্যে বহন করা হচ্ছিল।’

গ্রেপ্তাররা হলেন- বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি থানার কম্বনিয়া গ্রামের ৭ ওয়ার্ডের নুরুল আলমের ছেলে মো. শাহজাহান (২৫), বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি থানার আশারতলী গ্রামের ৮ ওয়ার্ডের বদিউজ্জামানের ছেলে মো. ইলিয়াছ (১৯), বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ঘিলাতলী গ্রামের ২ নম্বর ওয়ার্ডের এম এ সামাদের ছেলে আতিকুর রহমান (২৫)।

পুলিশ সূত্রে জানায়, গ্রেপ্তার ও অজ্ঞাতনামা আসামিরা বিভিন্ন সময় চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন গার্মেন্ট থেকে পোশাক সংগ্রহ করে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর কাছে পাচার করত। পাশাপাশি ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যও পরিবহনের মাধ্যমে সরবরাহ করত। আধুনিক প্রযুক্তি ও মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে তাদের শনাক্ত করা হয়।

এ ঘটনায় রামু থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ (সংশোধিত ২০১৩)-এর বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া আলামতের মধ্যে রয়েছে- ১ হাজার ৬০০ পিস আগ্নেয়াস্ত্রের ম্যাগাজিনের বাউন্ডলি ও একটি মিনি পিকআপ গাড়ি।

রামু থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তারা একাধিকবার গাড়ির নম্বর প্লেট পরিবর্তন করেছে এবং পুলিশের গতিবিধি লক্ষ্য করে দিক পরিবর্তনের চেষ্টা করেছিল।

কক্সবাজার থেকে নাইক্ষ্যংছড়ির দিকে প্রবেশের আগেই আমরা তাদের গাড়িসহ আটক করি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্তে অভিযান চলমান রয়েছে।’

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) এ এন এম সাজেদুর রহমান বলেন, ‘সীমান্তবর্তী এলাকায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর কাছে সরঞ্জাম সরবরাহ দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য মারাত্মক হুমকি। এই ঘটনায় জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। গ্রেপ্তারদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মূল হোতাসহ জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ সর্বোচ্চ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।’

এদিকে রামুর সচেতন মহল জানিয়েছে, নবাগত ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া যোগদানের পর থেকে পুলিশ প্রশাসনের সমন্বয়ে চোরাচালান, মানবপাচার, ছিনতাই ও ডাকাতি প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে